১৬ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার
৩১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী ছিলেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর’

শেয়ার করুন

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, রুহুল আমিন গাজী সবসময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হিসেবে কাজ করেছেন। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পেছনে কে আছেন দেখতেন না। সবসময় সাহস নিয়ে এগিয়ে যেতেন।

বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজের প্রয়াত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন গাজীর স্মরণসভায় তিনি এসব বলেন।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলমের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও কালেরকণ্ঠ সম্পাদক হাসান হাফিজ, যুগান্তর সম্পাদক আবদুল হাই শিকদার, আমার দেশের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাকের হোসাইন, ড. মাহবুব হাসান, সরদার ফরিদ আহমেদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আকন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি খায়রুল বাশার, বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি একেএম মহসিন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি মোরসালিন নোমানী ও ইলিয়াস হোসেন, পার্লামেন্ট জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হারুন জামিল, সিনিয়র সাংবাদিক মোদাব্বের হোসেন, রফিক মোহাম্মদ, আবু বকর, দিদারুল আলম, শাহনাজ পলি, লাবিন রহমান প্রমুখ।

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, রুহুল আমিন গাজী ছিলেন সৎ, নির্ভীক ও সাহসী সাংবাদিকতার প্রতীক। সাংবাদিকতা জীবনে তিনি কোনো অপশক্তির কাছে মাথানত করেননি। সাহসী সাংবাদিকতা চর্চায় তার অবস্থান ধরে রাখায় সাংবাদিকদের কাছে আদর্শ ছিলেন তিনি।

রুহুল আমিন গাজীর কর্মময় জীবন তুলে ধরে কাদের গনি চৌধুরী বলেন, তিনি জাতিকে বহু সেবা দিয়েছেন। তিনি সংবাদকর্মীদের অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করেছেন নিরলসভাবে।তিনি যোগ্যতার সঙ্গে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ে তার কোনো বিকল্প ছিল না। ফ্যাসিস্ট সরকারের অন্যায়ের বিরোধিতা করে কারাবরণ করতে হয়েছে বরেণ্য এই সাংবাদিককে। তবু তিনি অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পিছপা হননি।

তিনি বলেন, ‘রুহুল আমিন গাজী মানুষ হিসেবে সজ্জন ছিলেন। আপাদমস্তক একজন সাংবাদিক হিসেবে সব সময় সত্যের পক্ষে কথা বলার সাহস জুগিয়েছেন তিনি। সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার যে নির্দেশনা দিয়েছেন, আমরা তা লালন করি।’ রুহুল আমিন গাজীর আদর্শ ও তার দেখানো পথে সাংবাদিকদের চলার আহ্বান জানান তিনি।

হাসান হাফিজ বলেন, রুহুল আমিন গাজী নেতৃত্বের গুণাবলী সম্পন্ন মানুষ ছিলেন। তিনি শুধু সাংবাদিক হিসেবেই নয়, নেতা হিসেবেও দেশের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।তিনি বলেন, রুহুল আমিন গাজী ছিলেন নির্যাতিত ও মজলুম সাংবাদিক। ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্দেশে তাকে বিনাবিচারে, বিনা-অপরাধে ১৮ মাস কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়। সে সময় তাকে নিয়মিত ওষুধ সেবন করতে দেওয়া হয়নি, এমনকি প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও খাবার পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।বহু সাংবাদিক ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগের অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেছিলেন কিন্তু রুহুল আমিন গাজী কোনো অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। গণতন্ত্র রক্ষায় আজীবন সামনের সারি থেকে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন।

আবদুল হাই শিকদার বলেন, ‘রুহুল আমীন গাজী মানবিক গুণাবলী সম্পন্ন মানুষ ছিলেন। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পেছনে কে আছেন সেটি খেয়াল রাখেননি। সবসময় সাহস নিয়ে চলেছেন। সাংবাদিকদের যেকোনো দাবি আদায়ে তিনি সবসময় সোচ্চার ছিলেন।’

সৈয়দ আবদাল আহমদ বলেন, রুহুল আমীন গাজী সবসময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হিসেবে কাজ করেছেন। অনেকেই অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেন। কিন্তু তিনি কোনো দিনও অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি। সড়কে-কলমে সবসময় তিনি অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাকের হোসেন বলেন, রুহুল আমীন গাজীর শূন্যস্থান পূরণ হওয়ার নয়। তিনি এমন এক সময় চলে গিয়েছেন যখন তার প্রয়োজন ছিল।

মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, রুহুল আমীন গাজী দেশের গণমাধ্যমে সাহসী ভূমিকা এবং সাংবাদিকতা পেশায় অনন্য অবদান রেখেছেন। সততা, বিশ্বস্ততা এবং বলিষ্ঠ ভূমিকা পালনের মাধ্যমে দীর্ঘদিন সাংবাদিক সমাজে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। তার গ্রহণযোগ্যতা ছিল সর্বাধিক এবং সর্বমহলে। গণমাধ্যমকর্মীদের অধিকার রক্ষার জন্য সবসময় কাজ করেছেন। দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে সংবাদ প্রকাশ এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে সবসময় কথা বলেছেন

খুরশীদ আলম বলেন, রুহুল আমীন গাজী দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের গণমাধ্যম জগতে সক্রিয় ছিলেন। স্বাধীন সাংবাদিকতার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছিলেন। তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের অধিকার, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং মতপ্রকাশের জন্য লড়াই করেছেন। একই সঙ্গে গণমাধ্যমের ওপর সরকারের চাপ, সাংবাদিকদের ওপর হামলা এবং স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরির পক্ষেও সবসময় সরব ছিলেন তিনি।

শেয়ার করুন