১৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার
১লা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রমজানের আগে পণ্যের দাম স্থিতিশীল, সংকট ভোজ্য তেলের

শেয়ার করুন

 

দুয়ারে কড়া নাড়ছে পবিত্র রমজান। আগামীকাল রাত থেকেই শুরু হচ্ছে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সিয়াম সাধনার মাস। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মগবাজারের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রমজান উপলক্ষে বাজারে ক্রেতাদের আনাগোনা বেড়েছে। তবে এবার অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল থাকলেও সংকট রয়েছে ভোজ্য তেলের।

বাজারের বর্তমান চিত্র

বাজারে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে মুরগি-মাংস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, রমজান ঘিরে এবার পণ্যের দাম অনেকটাই স্থিতিশীল রয়েছে, তবে সয়াবিন তেলের সরবরাহে ঘাটতি দেখা যাচ্ছে।

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম

ডাল-চিনির বাজার: বিদেশি ছোলা ১১০-১১৫ টাকা/কেজি, বুটের বেসন ৯০-১৪০ টাকা/কেজি, খোলা আটা ৪২ টাকা/কেজি, প্যাকেট আটা (২ কেজি) ১০০ টাকা, খোলা চিনি ১২০ টাকা/কেজি, দেশি চিনি ১৪৫ টাকা/কেজি।

ভোজ্য তেল: সয়াবিন ১ লিটার ১৭৫ টাকা, ২ লিটার ৩৫০ টাকা, ৫ লিটার ৮৫০ টাকা।

ডাল ও চাল: দেশি মসুর ডাল ১৩৫ টাকা/কেজি, ভারতীয় মসুর ডাল ১১০ টাকা/কেজি, আতপ চাল ১১০-১৩৫ টাকা/কেজি, মিনিকেট চাল ৬৫-৮০ টাকা/কেজি, নাজিরশাইল চাল ৬৫-৯০ টাকা/কেজি।

মাংস ও মাছের বাজার

ব্রয়লার মুরগি ২১০ টাকা/কেজি, গরুর মাংস ৭৮০ টাকা/কেজি।

ইলিশ ১,০০০ টাকা/কেজি, পাঙাশ ২৪০ টাকা/কেজি, বোয়াল ৫০০ টাকা/কেজি, বড় রুই ৪৬০ টাকা/কেজি।

ডিম ১৩০ টাকা/ডজন।

সবজির বাজার

সবজির বাজার কিছুটা চড়া হলেও অস্বাভাবিক নয়। লেবুর দাম বেড়ে ১০০ টাকা হালি হয়েছে। অন্যান্য সবজির দাম:

টমেটো ৩০ টাকা/কেজি, দেশি গাজর ৩০ টাকা/কেজি, শিম ৪০-৫০ টাকা/কেজি, বেগুন ৬০-৭০ টাকা/কেজি, করল্লা ১০০ টাকা/কেজি, পেঁপে ৪০ টাকা/কেজি, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা/কেজি, ধনেপাতা ১২০ টাকা/কেজি।

তেলের সংকট ও ব্যবসায়ীদের মতামত

বাজারের মুদি দোকানিরা জানিয়েছেন, সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। তারা কাওরান বাজার থেকে তেল সংগ্রহ করেন, কিন্তু বর্তমানে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম। ফলে ব্যবসায়ীরা খুবই সীমিত পরিমাণে তেল পাচ্ছেন।

মুদি দোকানি মো. মোজাফফর হোসেন বলেন,
“আগে দুই কার্টুন তেল আনতে পারতাম, এখন মাত্র দুই-তিন বোতল পাচ্ছি। এতে ক্রেতাদের চাহিদা মেটানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এছাড়া আমরা ৮৪৬ টাকায় যে তেল কিনছি, সেটি ৮৫০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে, কিন্তু পরিবহন খরচসহ লাভ থাকছে না। তবু দামের ব্যাপারে প্রশাসনের কড়াকড়ি থাকায় আমরা বেশি নিতে পারছি না।”

ক্রেতাদের অভিমত

বাজার করতে আসা ক্রেতা জাহিদ আহসান বলেন,
“বাজারের দাম গত সপ্তাহের মতোই আছে, ৫-১০ টাকা বাড়তি মনে হচ্ছে কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে। তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না, আর পেলেও দাম বেশি।”

সবজি বিক্রেতা আলভি জানান,
“কিছু সবজির মৌসুম শেষ হওয়ায় দাম বেড়েছে, তবে তা খুব বেশি নয়। বাকি পণ্যগুলোর দাম মোটামুটি স্বাভাবিক আছে।”

সার্বিক মূল্যায়ন

রমজানের আগে বাজার তুলনামূলক স্থিতিশীল থাকলেও সয়াবিন তেলের সংকট এবং কিছু পণ্যের সরবরাহ নিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে। প্রশাসনের নজরদারি ও সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক থাকলে রমজান মাসে বাজার পরিস্থিতি ভালো থাকবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

 

শেয়ার করুন