
রোজা রাখা আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে প্রাপ্ত বয়স্ক নারী-পুরুষ সবার জন্য ফরজ। তবে কিছু নির্দিষ্ট কারণে রোজা না রাখার এবং পরবর্তীতে কাজা করার বিধান দেওয়া হয়েছে। এসব কারণে নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য সমান বিধান রয়েছে, যেমন প্রচন্ড অসুস্থতা, সফরে থাকা এবং বৃদ্ধ বয়সে পৌঁছানো। তবে নারীদের জন্য একটি অতিরিক্ত বিষয় রয়েছে, যার কারণে তাদের রোজা না রাখার বিধান রয়েছে। সেটা হলো পিরিয়ড।
পিরিয়ড কোনো সমস্যা বা দোষণীয় বিষয় নয়; এটি নারীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রার অংশ। এই সময় নারীকে ইসলামে নামাজ এবং রোজা না রাখার বিধান দেওয়া হয়েছে। পিরিয়ড চলাকালে নারীদের নামাজ পড়তে হবে না এবং নামাজের কাজাও করতে হবে না। তবে রোজার ক্ষেত্রে একটি পার্থক্য রয়েছে।
পিরিয়ডের সময়ে রোজা রাখা যাবে না। যদি কেউ রোজা রাখার চেষ্টা করেও থাকেন, তা আদায় হবে না। তবে পরবর্তীতে সেই রোজা কাজা করা যাবে। এর বিষয়ে হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে,
كَانَ يُصِيبُنَا ذَلِكَ مَعَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وآله وسلم فَنُؤْمَرُ بِقَضَاءِ الصَّوْمِ وَلا نُؤْمَرُ بِقَضَاءِ الصَّلاةِ
অর্থাৎ, আমাদের ঋতুস্রাব হলে রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে রোজার কাজা আদায় করতে বলতেন, কিন্তু নামাজের কাজা আদায় করার নির্দেশ দিতেন না। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)
এছাড়া, যদি কেউ রমজান মাসে রোজা রাখার জন্য ঔষধ ব্যবহার করে পিরিয়ড বন্ধ রাখে, তবে তার জন্য রোজা রাখা জায়েজ হবে। কারণ, পিরিয়ড থাকার যে কারণ ছিল, তা আর নেই। তবে এর আগে, ঔষধ ব্যবহারের বিষয়ে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এবং নিশ্চিত হতে হবে যে, এই ঔষধ ব্যবহারের ফলে তার স্বাস্থ্যের কোনো ক্ষতি হবে না। যদি স্বাস্থ্যের কোনো ক্ষতির আশঙ্কা থাকে, তাহলে পিরিয়ড বন্ধ রেখে রোজা রাখা থেকে বিরত থাকা উচিত।
আল্লাহ তায়ালা নারীদের জন্য যে সহজতর বিধান দিয়েছেন, তা অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ এবং নিজের সুস্থতা বজায় রাখা উচিত।