
মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে এমন একটি নতুন করোনা ভাইরাসের সন্ধান পেয়েছেন চীনের বিজ্ঞানীরা। “এইচকেইউ৫-কোভ-২” নামে পরিচিত এই ভাইরাসের সঙ্গে অতীতের মহামারি সৃষ্টিকারী ভাইরাসগুলোর মিল রয়েছে, যা বিশ্বজুড়ে নতুন মহামারির আশঙ্কা তৈরি করেছে।
চীনের উহানের ‘ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি’র গবেষকরা নতুন এই স্ট্রেনটি বাঁদুরের মধ্যে শনাক্ত করেছেন। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই ভাইরাসটির সঙ্গে মার্স (MERS) করোনা ভাইরাসের সম্পর্ক রয়েছে। মার্স ভাইরাস অত্যন্ত মারাত্মক, যার সংক্রমণে আক্রান্তদের প্রায় ৭৫ শতাংশ মৃত্যুবরণ করে।
সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ শি ঝেংলি, যিনি করোনা ভাইরাস নিয়ে গবেষণার জন্য “ব্যাটওমেন” নামে পরিচিত, নতুন এই ভাইরাসের বিস্তারিত তথ্য একটি বৈজ্ঞানিক জার্নালে প্রকাশ করেছেন। গবেষণায় দেখা গেছে, “এইচকেইউ৫-কোভ-২” ভাইরাসটি মানুষের কোষে প্রবেশের ক্ষমতা রাখে, যেমনটি কোভিড-১৯ করত। শি ঝেংলি সতর্ক করে বলেছেন, এই ভাইরাস মানুষের সংক্রমিত হওয়ার উচ্চ ঝুঁকি বহন করে।
মার্স একটি শ্বাসযন্ত্রজনিত সংক্রামক রোগ, যা প্রাণী থেকে মানুষ এবং পরে মানুষের মাধ্যমে আরও ছড়াতে পারে। মার্স সংক্রমণে জ্বর, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া ও বমির মতো উপসর্গ দেখা যায় এবং মারাত্মক সংক্রমণের ক্ষেত্রে এটি প্রাণঘাতী হতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত মাত্র দু’জন ব্যক্তি মার্স ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ২০১৪ সালের মে মাসে শনাক্ত হওয়া এই দুই ব্যক্তি মধ্যপ্রাচ্যে ভ্রমণ করেছিলেন। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এখন পর্যন্ত মার্স ভাইরাসের কোনো কার্যকর প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হয়নি।
নতুন “এইচকেইউ৫-কোভ-২” ভাইরাসটি মারবেকোভাইরাস পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। গবেষণায় দেখা গেছে, মিঙ্ক ও প্যাঙ্গোলিন নামের দুটি প্রাণীর মধ্যে এই ভাইরাসের অস্তিত্ব রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এসব প্রাণীর মাধ্যমে ভাইরাসটি বাঁদুর এবং পরবর্তীতে মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, নতুন এই ভাইরাসটির উপর গভীর নজরদারি ও গবেষণা প্রয়োজন, যাতে ভবিষ্যতে মহামারির ঝুঁকি মোকাবিলা করা সম্ভব হয়।