
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের কাছে অনেক কিছু বিক্রি করলেও তিস্তার এক ফোঁটা পানিও আনতে পারেনি। শুধু তিস্তা নয়, ৫৪টি অভিন্ন নদীর উজানে ভারত বাঁধ নির্মাণ করেছে। এসব বাঁধ দিয়ে তারা পানি তুলে নিয়ে যায়, বিদ্যুৎ উৎপাদন করে, অথচ বাংলাদেশে কৃষকরা সেচের পানির অভাবে ফসল ফলাতে পারে না, জেলেরা মাছ ধরতে পারে না, আর সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়ে।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রংপুরের কাউনিয়ায় তিস্তা রেলসেতু পয়েন্টে ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে রংপুর অঞ্চলের ১১টি পয়েন্টে একযোগে ৪৮ ঘণ্টার এ কর্মসূচি পালন করছে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “তিস্তা বাঁচানোর এই ডাক আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার ডাক। আমরা ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। আমাদের তরুণেরা লড়াই করেছে, ত্যাগ স্বীকার করেছে। কিন্তু এই সরকার তিস্তাসহ দেশের স্বার্থ রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। একদিকে আমাদের পানি দেয় না, অন্যদিকে এই সরকারকে ভারত আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে রাখছে।”
তিনি আরও বলেন, “তিস্তা বাঁচানোর এই আন্দোলন কখনো থামবে না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই—তিস্তা নিয়ে আপনাদের অবস্থান পরিষ্কার করুন। ভারতকে বলতে হবে, আমরা আমাদের পানির ন্যায্য হিস্যা চাই। আর যেহেতু আপনারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দিয়ে জনগণের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন।”
ভারতের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “যদি বাংলাদেশের সঙ্গে প্রকৃত বন্ধুত্ব চান, তাহলে তিস্তার পানি দিন, সীমান্তে গুলি করে হত্যা বন্ধ করুন এবং আমাদের প্রতি বড় দাদার মতো আচরণ বন্ধ করুন। আমরা আত্মমর্যাদার সঙ্গে আমাদের ন্যায্য অধিকার চাই। ভারতকে অবশ্যই বন্ধুত্বের সঙ্গে দেখতে চাই, তবে সেই বন্ধুত্ব হতে হবে পারস্পরিক সম্মান ও ন্যায্য পাওনা বুঝিয়ে দেওয়ার ভিত্তিতে।”
এর আগে, সোমবার সকাল থেকে রংপুরের কাউনিয়া রেলসেতু ও গঙ্গাচড়া মহিপুর সেতু পয়েন্টে ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ কর্মসূচিতে অংশ নিতে নদীপাড়ের হাজারো মানুষ খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমবেত হন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে কর্মসূচি জনসমুদ্রে পরিণত হয়।