১৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার
১লা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সালমান রুশদিকে হত্যাচেষ্টার দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিচার শুরু

শেয়ার করুন

 

ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ-আমেরিকান ঔপন্যাসিক সালমান রুশদিকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিচার শুরু হয়েছে। ২০২২ সালে নিউইয়র্কে এক বক্তৃতার সময় দর্শকদের সামনে তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়।

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, অভিযুক্ত হাদি মাতারের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা ও হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে। সোমবার তার বিচার শুরু হয়, যেখানে আইনজীবীরা সূচনা বক্তব্য দেন।

হামলার বিবরণ

২০২২ সালের আগস্টে নিউইয়র্কের চৌতাউকুয়া ইনস্টিটিউশনের এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার সময় হাদি মাতার মঞ্চে উঠে রুশদিকে ঘাড়, পেট, বুকে, হাতে ও ডান চোখে ১২ বারের বেশি ছুরিকাঘাত করেন।

এতে রুশদি আংশিকভাবে অন্ধ হয়ে যান এবং তার একটি হাত স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

বিচারের সময় ৭৭ বছর বয়সী রুশদি আদালতে সাক্ষ্য দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এতে দুই বছরেরও বেশি সময় পর তিনি প্রথমবারের মতো তার হামলাকারীর মুখোমুখি হবেন।

রুশদির জীবন ও বিতর্ক

বুকার পুরস্কার বিজয়ী এই লেখক ১৯৮১ সালে প্রকাশিত ‘মিডনাইটস চিলড্রেন’ উপন্যাসের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেন। তবে তার চতুর্থ উপন্যাস ‘স্যাটানিক ভার্সেস’ (১৯৮৮) প্রকাশের পর ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়।

১৯৮৯ সালে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনি রুশদির বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের ফতোয়া জারি করেন এবং তার মাথার জন্য ৩০ লাখ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করা হয়।

এরপর প্রায় ১০ বছর আত্মগোপনে থাকার পর ইরান জানায়, তারা এই আদেশ কার্যকর করবে না। এরপর থেকে রুশদি তুলনামূলকভাবে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করছিলেন, কিন্তু ২০২২ সালের হামলা তার জীবনে নতুন সংকট তৈরি করে।

অভিযুক্ত হাদি মাতারের অবস্থান

নিউ জার্সির ফেয়ারভিউয়ের বাসিন্দা ২৭ বছর বয়সী হাদি মাতার আদালতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। তবে প্রসিকিউশন তার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ প্রমাণের জন্য কাজ করছে।

রুশদির প্রতিক্রিয়া

২০২৩ সালে প্রকাশিত তার স্মৃতিকথা ‘নাইফ: মেডিটেশন আফটার অ্যান মার্ডার’-এ তিনি এই হামলা এবং তার দীর্ঘ পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ার বর্ণনা দিয়েছেন।

সালমান রুশদির জন্ম ১৯৪৭ সালে মুম্বাইয়ে এক কাশ্মিরি মুসলিম পরিবারে। তার বই বিশ্বব্যাপী আলোচিত হলেও বিভিন্ন দেশে ‘স্যাটানিক ভার্সেস’ নিষিদ্ধ করা হয়, যার মধ্যে প্রথম ছিল তার জন্মস্থান ভারত।

বিচার প্রক্রিয়া কীভাবে এগোবে?

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রুশদির সাক্ষ্য বিচার প্রক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হবে। যদি হাদি মাতার দোষী সাব্যস্ত হন, তবে তিনি আজীবন কারাদণ্ডের মুখোমুখি হতে পারেন।

 

শেয়ার করুন