১৬ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার
৩১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বেনজীরকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলে রেড অ্যালার্ট জারিতে নির্দেশনা

শেয়ার করুন

বেনজীরকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলে রেড অ্যালার্ট জারির নির্দেশ

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলের রেড অ্যালার্ট জারি করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব এ নির্দেশ দেন।

অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের পরিচালক হাফিজুল ইসলামের আবেদনের ভিত্তিতে এই আদেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

অবৈধ সম্পদের মামলা ও অভিযোগ

বিভিন্ন সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবার বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছে। ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের বিরুদ্ধে চারটি মামলা করে দুদক। এসব মামলায় ৭৪ কোটি ১৩ লাখ ৩৯ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়।

২০২৪ সালের ৩১ মার্চ ও ৩ এপ্রিল এক জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ওঠে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, তিনি বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছেন, যা তার বৈধ আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

দুদকের তদন্ত ও সম্পদ জব্দ

অভিযোগের ভিত্তিতে ১৮ এপ্রিল দুর্নীতি দমন কমিশনের এক সভায় অনুসন্ধান শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তদন্তে বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের নামে ৬৯৭ বিঘা জমি, ১৯টি কোম্পানির শেয়ার, ঢাকায় ১২টি ফ্ল্যাট, ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, ৩৩টি ব্যাংক হিসাব এবং তিনটি বিও হিসাবের তথ্য পাওয়া যায়। আদালতের আদেশে এসব সম্পদ জব্দ ও অবরুদ্ধ করা হয়।

অনুসন্ধান শুরু হওয়ার পর মে মাসের প্রথম সপ্তাহে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দেশত্যাগ করেন বেনজীর আহমেদ। এরপর ২৮ মে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দফায় তলব করা হলেও তারা দুদকে হাজির হননি।

২০২৪ সালের ২৩ মে আদালত বেনজীর আহমেদের ৮৩টি দলিলভুক্ত সম্পত্তি (৩৪৫ বিঘা) এবং ৩৩টি ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশ দেন। পরে ২৬ মে আরও ১১৯টি জমির দলিল, ২৩টি কোম্পানির শেয়ার ও গুলশানের চারটি ফ্ল্যাট জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে ৬২৭ বিঘা জমি ক্রোক করা হয়েছে।

বেনজীর আহমেদের অতীত ও নিষেধাজ্ঞা

বেনজীর আহমেদ ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার এবং র‌্যাবের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।

মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র র‌্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, যার মধ্যে বেনজীর আহমেদের নামও অন্তর্ভুক্ত ছিল।

 

শেয়ার করুন