
মহাখালীতে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের মিছিল ও রেলপথ অবরোধ
সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণার দাবিতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করে মহাখালী রেলপথ অবরোধ করেছেন। এতে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছেড়ে আসা একটি ট্রেন আটকে যায়। শিক্ষার্থীরা লাল পতাকা দেখিয়ে ট্রেনটি থামানোর পর এটি আটকে যায়।
আটকে যাওয়া ট্রেনটির লোকোমাস্টার লতিফ বলেন, “উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনটি ৩টা ২৫ মিনিটে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছেড়ে আসে। আমার ট্রেনের গতিসীমা ছিল ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটার। এর মধ্যে রেলগেটে দূর থেকেই লাল পতাকা ও মানুষের জটলা দেখতে পাই। পরে ট্রেনটি দ্রুত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে গতি কমিয়ে থামাতে সক্ষম হই। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।”
তিনি আরও বলেন, “হঠাৎ ট্রেন থামাতে বেগ পেতে হয়েছে। তবে কোনো সমস্যা হয়নি।”
এর আগে, কলেজের মূল ফটকের সামনে অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে মহাখালী ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান। এসময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান ও প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। স্লোগানগুলোর মধ্যে ছিল: ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘তিতুমীর আসছে, রাজপথ কাঁপছে’, ‘টিসি না টিউই, টিউই টিউই’, ‘আমার ভাই অনশনে, প্রশাসন কি করে’, ‘প্রশাসনের সিন্ডিকেট, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্য, চলবে না চলবে না’, ‘অধ্যক্ষের সিন্ডিকেট, মানি না মানব না’, ‘আমাদের সংগ্রাম, চলছে চলবে’ ইত্যাদি।
এদিকে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন কেন্দ্র করে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। মহাখালী আমতলী মোড় ও রেলগেট এলাকায় বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থান নিতে দেখা গেছে। পাশেই পুলিশের একটি জলকামানও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে বেশ কয়েকমাস ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। এই দাবিতে মিছিল, সড়ক-রেলপথ অবরোধ, স্মারকলিপি প্রদান, ক্লাস বর্জনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাই করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়। তবে সম্প্রতি এ বিষয়ে ইতিবাচক কোনো সাড়া না পেয়ে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেল থেকে দাবি আদায়ে আমরণ অনশনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
সবশেষ গতকাল রাতে তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ৩ দফা দাবি ঘোষণা করা হয়েছে। দাবিগুলো হলো:
১. তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করতে হবে।
২. শিক্ষা উপদেষ্টার বক্তব্য অবিলম্বে প্রত্যাহার করে তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বাংলাদেশের সব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আন্তর্জাতিক মানের উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করে যোগ্যতা বিবেচনায় নিজস্ব প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে হবে।
৩. তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন গঠন প্রক্রিয়ায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওপর আইন উপদেষ্টার চাপ সৃষ্টি করার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টির দায়ভার মাথায় নিয়ে আইন উপদেষ্টাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।