
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে চোখে আঘাতপ্রাপ্ত রোগীদের চিকিৎসা করতে সিঙ্গাপুর থেকে পাঁচজন খ্যাতনামা চক্ষু বিশেষজ্ঞের একটি দল বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে দুই দিনের কার্যক্রমের প্রথম দিনে, চিকিৎসকরা জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল (এনআইওএন্ডএইচ) এবং বাংলাদেশ চক্ষু হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা দেন।
এই দিন, শতাধিক রোগীর চোখ পরীক্ষা করে এবং ইতোমধ্যে দেওয়া চিকিৎসা মূল্যায়ন করা হয়। চিকিৎসকরা রোগীদের জন্য ভবিষ্যৎ চিকিৎসা এবং পুনর্বাসন প্রোটোকল সম্পর্কে পরামর্শ দেন। দ্বিতীয় দিন, রোববার, তারা আরও রোগী দেখবেন এবং রাতে সিঙ্গাপুর ফিরে যাবেন।
চক্ষু বিশেষজ্ঞ দলের সদস্যরা হলেন: মাউন্ট এলিজাবেথ নোভেনা হাসপাতালের চক্ষু ও কর্নিয়া সার্জারি প্রধান ডোনাল্ড ট্যান, ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের অফথালমোলোজির ক্লিনিক্যাল ডিরেক্টর ব্লাঞ্চ লিম, সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল আই সেন্টারের সহযোগী অধ্যাপক এবং রেটিনা সার্জন রোনাল্ড ইয়োহ, মাউন্ট এলিজাবেথ নোভেনা হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ও রেটিনা বিশেষজ্ঞ নিকোল ট্যান, এবং সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল আই সেন্টারের কনসালট্যান্ট চক্ষু বিশেষজ্ঞ রুবেন ফু।
চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক খায়ের আহমেদ চৌধুরী জানান, সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকরা ইতোমধ্যে দেওয়া চিকিৎসা মূল্যায়ন করবেন এবং পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবেন। তিনি আরও বলেন, যদি রোগীদের আরও চিকিৎসার প্রয়োজন হয়, তবে চিকিৎসকদের আরেকটি দল পাঠানো হবে। একইসাথে, বিদেশে চিকিৎসার প্রয়োজন হলে সেই পরামর্শও দেওয়া হবে।
জুলাই আন্দোলনে চোখে আঘাতপ্রাপ্তদের চিকিৎসার জন্য এটি চতুর্থ চক্ষু বিশেষজ্ঞ দল। এর আগে একটি চীনা, একটি নেপালি এবং একটি ফরাসি দল বাংলাদেশে এসেছিল। চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের তথ্যমতে, আন্দোলনের সময় চোখে আঘাতপ্রাপ্ত কয়েকশ রোগী এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন, যাদের মধ্যে ৪০০ জন এক চোখে এবং ৫৫ জন উভয় চোখে আঘাত পেয়েছেন। আরও ৯ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হয়েছে।
ডা. রোনাল্ড ইয়োহ, সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল আই সেন্টারের রেটিনা বিশেষজ্ঞ, জানান, আন্দোলনের সময় হাজার হাজার মানুষের চোখের আঘাত বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর বিরাট চাপ সৃষ্টি করেছিল। তবে, চক্ষু হাসপাতালগুলো অত্যন্ত দক্ষতার সাথে রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থা করেছে এবং তাদের কাজ দেখে তারা মুগ্ধ।
এই কার্যক্রমটি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বুয়েট আমরা ৯২ ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ চক্ষু হাসপাতাল, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং অরবিস ইন্টারন্যাশনালের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত হয়েছে।