১৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার
১লা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দুর্বল তদন্ত ও অপেশাদার প্রসিকিউশন ন্যায়বিচারের অন্তরায়

শেয়ার করুন

দুর্বল তদন্ত ও অপেশাদার প্রসিকিউশন: ন্যায়বিচারের অন্তরায়
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের জন্য একটি স্বতন্ত্র প্রসিকিউশন সার্ভিস গঠন এবং সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহীর গ্র্যান্ড রিভার ভিউ হোটেলে সুপ্রিম কোর্ট ও ইউএনডিপির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। সেমিনারের থিম ছিল ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ ও বিচারসেবা প্রদানে দক্ষতা বৃদ্ধির করণীয়’।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি, মাননীয় বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম।

প্রধান বিচারপতি তার ভাষণে ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন নিশ্চিতকরণে বিচার বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরেন এবং বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ বাস্তবায়নের অগ্রগতির বিষয়েও আলোচনা করেন। বিশেষ করে, তিনি উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগের জন্য সম্প্রতি জারিকৃত অধ্যাদেশের কথা উল্লেখ করেন। পাশাপাশি, একটি স্বাধীন প্রসিকিউশন সার্ভিস চালু করা এবং সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, দুর্বল তদন্ত ও অপেশাদার প্রসিকিউশন বাংলাদেশের ন্যায়বিচারের প্রধান অন্তরায়। তিনি প্রসিকিউটরদের প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেন, যাতে তারা ন্যায়বিচার রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেন।

তিনি সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার বিষয়ে পুনর্ব্যক্ত করেন এবং বলেন, একটি পৃথক সচিবালয় বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। প্রস্তাবিত সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় বিচারিক নীতি প্রণয়ন, বাস্তবায়ন, বাজেট বরাদ্দ, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং বিচারকদের বদলি ও পদোন্নতিতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে।

প্রধান বিচারপতি জানান, ইতোমধ্যে সরকারের কাছে একটি বিশদ প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে, যা বর্তমানে সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে। তিনি দেশের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে একটি আধুনিক বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

সেমিনারে ইউএনডিপির বাংলাদেশ প্রতিনিধি স্টেফান লিলার বলেন, বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বতন্ত্রকরণে প্রধান বিচারপতি ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ একটি যুগোপযোগী পদক্ষেপ। তিনি বাংলাদেশের বিচার বিভাগের আধুনিকায়নে উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে পাশে থাকার আশ্বাস প্রদান করেন।

বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম প্রধান বিচারপতি ঘোষিত রোডম্যাপের পূর্ণ বাস্তবায়নে আইনি সংস্কারের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, রোডম্যাপের সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের বিচারপ্রার্থীরা বিচার বিভাগের পৃথকীকরণের সুফল উপভোগ করতে সক্ষম হবেন।

শেয়ার করুন