
ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকা ফার্স্ট নীতি অনুসরণ করে যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি স্থগিত করার একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন। এই স্থগিতাদেশ প্রথমে তিন মাসের জন্য হলেও, এর প্রভাব বাংলাদেশে চলমান বিভিন্ন প্রকল্পে পড়বে। খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিবেশ সংরক্ষণসহ নানা খাতের জন্য সহায়তা সংকুচিত হতে পারে, যা প্রকল্পে কর্মরত কর্মীদের জন্য একটি বড় ঝুঁকি তৈরি করবে। তবে রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা ও পুষ্টি কার্যক্রমে অর্থায়ন চালু থাকবে।
বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার বড় অংশ ইউএসএইডের মাধ্যমে প্রদান করা হয়। ২০১৭ সাল থেকে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় ২.৫ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেয়ার পর, গত কয়েক বছরে আরও কয়েক বিলিয়ন ডলার সহায়তা প্রদান করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই সহায়তা বন্ধ হওয়ায় শুধু ইউএসএইডের প্রকল্প নয়, ইউনিসেফ, সেভ দ্য চিলড্রেন, ইউএনডিপি এবং আইসিডিডিআর,বির মতো স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, আইসিডিডিআর,বি পরিচালিত টিবি নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পগুলো স্থগিত করা হয়েছে এবং কর্মীদের চাকরিচ্যুতির শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এছাড়া, ইউএসএইডের অর্থায়নে পরিচালিত সূর্যের হাসি ক্লিনিকসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা প্রকল্পও বিপদের মুখে পড়েছে। এর ফলে দেশের ওষুধ শিল্প ও জনস্বাস্থ্যের নানা ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এছাড়া, স্বাস্থ্য খাতের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প যেমন ‘ফিড দ্য ফিউচার’ এবং ‘ওয়ান হেলথ’ ইত্যাদি কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে যেতে পারে, যা বাংলাদেশে জরুরি স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে বড় সমস্যা সৃষ্টি করবে। কিছু প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে তাদের কর্মীদের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠিয়েছে এবং ভবিষ্যৎ কার্যক্রম নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমেরিকার সহায়তা বন্ধ হলে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন এবং স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন প্রক্রিয়া বড় ধরনের সংকটে পড়বে। তাই, দেশের জন্য একদিকে যেমন চ্যালেঞ্জ, অন্যদিকে এটি একটি বার্তা যে বাংলাদেশকে এখন নিজের সক্ষমতা বৃদ্ধির দিকে মনোযোগ দিতে হবে।