
১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর সোমবার গাজা উপত্যকায় ফিরে এসেছেন ৩ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি। গাজার জনসংযোগ দপ্তর এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “ইসরায়েলি বাহিনীর আক্রমণের কারণে উত্তর গাজার বাসিন্দাদের একটি বড় অংশ এতদিন উপত্যকার দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছিল। ৪৭০ দিন পর তারা এখন নিজেদের বাড়িতে ফিরছেন।”
ইসরায়েলি বাহিনীর বোমার আঘাতে উত্তর গাজার অধিকাংশ বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে, তবে সত্ত্বেও প্রায় ১৫ মাস পর নিজেদের এলাকা ফিরে পেয়ে উচ্ছ্বসিত উত্তর গাজার বাসিন্দারা।
সোমবার সকাল থেকে নেৎজারিম করিডোর দিয়ে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি উত্তর গাজায় ফিরে আসতে শুরু করেন। অনেকেই নিজেদের মালপত্র নিয়ে আসতে ঘোড়া বা গাধার গাড়ি ব্যবহার করেছেন। গাজার প্রধান সড়কের একটি ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের সামনে ‘গাজায় স্বাগতম’ লেখা একটি ব্যানার টাঙানো ছিল।
উত্তর গাজার বাসিন্দা ২২ বছর বয়সী লামিস আল ইওয়াদি দীর্ঘদিন পর নিজের এলাকায় ফিরে অত্যন্ত আনন্দিত। তিনি এএফপিকে জানান, “আজকের দিনটি আমার জীবনের সবচেয়ে সুখের দিন। আমার মনে হচ্ছে, এতদিন আমি মৃত ছিলাম; আজ আমার শরীরে আবার জীবন ফিরে এসেছে।”
ধ্বংসস্তূপ তাকে হতাশ করেনি। লামিস বলেন, “আমরা আবার আমাদের বাড়ি তৈরি করব। যদিও বালি আর কাদার সাহায্যে বানাতে হয়, তবুও।”
হামাসের এক মুখপাত্র এএফপিকে জানান, উত্তর গাজায় ফিরে আসা বাড়িঘর হারানো ফিলিস্তিনিদের জন্য অন্তত ১ লাখ ৩৫ হাজার তাঁবুর প্রয়োজন।
২০২৩ সালের ৭ আগস্ট ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী গাজায় অভিযান শুরু করে। টানা ১৫ মাসের এই অভিযানে ৪৭ হাজার ৩ শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হন, ১ লাখ ১২ হাজারের বেশি আহত হন এবং লাখ লাখ ফিলিস্তিনি বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতে বাধ্য হন।
যুক্তরাষ্ট্র, কাতার এবং মিসরের ব্যাপক কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পর ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে এবং এভাবে বাস্তুচ্যুত বাসিন্দারাও ফিরে আসতে শুরু করেছেন।