১৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার
১লা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রসারিত হচ্ছে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের সম্পর্ক, বাণিজ্য বাড়ার আশা চারগুণ

শেয়ার করুন

গত আগস্টে বাংলাদেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের নতুন মাত্রা শুরু হয়েছে। এতে দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কও দ্রুত উন্নতি লাভ করছে। আগামী এক বছরে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ তিনগুণ বেড়ে ৩০০ কোটি ডলারে পৌঁছাতে পারে, যা বর্তমানে প্রায় চারগুণ বৃদ্ধি হিসেবে বিবেচিত।

নিক্কেই এশিয়ার এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্ক কখনোই খুব মসৃণ ছিল না। আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে থাকা সময়ে এই সম্পর্ক আরও জটিল আকার ধারণ করে। ২০১৪ সালে শেখ হাসিনার তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর সম্পর্কের টানাপড়েন তলানিতে পৌঁছায়। তবে ২০২৪ সালের আগস্টে তার পতনের পর পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।

গত এক বছরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস একাধিক বৈঠক করেছেন। এ ছাড়া বাংলাদেশের উচ্চপর্যায়ের সামরিক কর্মকর্তা জেনারেল এস এম কামরুল হাসান ইসলামাবাদ সফর করে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল অসিম মুনিরের সঙ্গে বৈঠক করেন।

সম্প্রতি পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফপিসিসিআই) থেকে একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করেছে। এটি গত এক দশকের মধ্যে পাকিস্তানের উচ্চপর্যায়ের ব্যবসায়িক দলের প্রথম সফর। তারা বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে যৌথ ব্যবসায়িক কাউন্সিল গঠনে একটি সমঝোতা স্মারক সই করে। একই সঙ্গে দুই দেশের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আহ্বান জানানো হয়।

এফপিসিসিআইয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সাকিব ফাইয়াজ মাগুন জানান, বাংলাদেশি বাণিজ্য উপদেষ্টা পাকিস্তানি ব্যবসায়ীদের প্রতি বাংলাদেশের আমদানি নির্ভরতার বিষয়টি তুলে ধরেছেন। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে পোশাক ও প্লাস্টিকশিল্প থাকলেও অনেক পণ্য তাদের আমদানি করতে হয়। পাকিস্তান এর মাধ্যমে নতুন বাণিজ্যিক সুযোগ পেতে পারে।

ইতিমধ্যে বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে ৫০ হাজার টন চাল ও ২৫ হাজার টন চিনি আমদানির আদেশ দিয়েছে। এছাড়া খেজুর, চাল, চিনি, তেল, তুলার সুতা ও নারীদের পোশাকের মতো আরও বিভিন্ন পণ্য আমদানির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

দুই দেশের সম্পর্কের উন্নতির ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম-করাচি জাহাজ যোগাযোগ পুনরায় চালু হওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ৫২ বছর পর এই রুটটি পুনরায় ব্যবহার হচ্ছে। সরাসরি ফ্লাইট চালুর বিষয়েও আলোচনা চলছে, যা ২০১৮ সাল থেকে বন্ধ রয়েছে। বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দূর হলে দুই দেশের বার্ষিক বাণিজ্য ৩০০ কোটি ডলারে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

 

শেয়ার করুন