
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল সোমবার শপথ গ্রহণের পর প্রথম ভাষণেই পানামা খালের ওপর মার্কিন নিয়ন্ত্রণ পুনর্বহালের হুমকি দিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, ১৯৯৯ সালে কৌশলগত এই জলপথের চূড়ান্ত হস্তান্তরের পর পানামা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে এবং খালের কার্যক্রম চীনের কাছে হস্তান্তরের অভিযোগ রয়েছে। ট্রাম্প বলেন, “আমরা এটা চীনকে দেইনি। আমরা এটা পানামাকে দিয়েছি এবং আমরা এটা ফিরিয়ে নিচ্ছি।”
পানামা খাল নিয়ে ট্রাম্পের উদ্বেগ নতুন নয়। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই তিনি এ বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়ে আসছেন। তার অভিযোগ, মার্কিন জাহাজের সঙ্গে পানামা ‘অন্যায্য’ আচরণ করছে এবং খালটির কার্যক্রম ঘিরে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব রয়েছে।
তবে পানামার সরকার ট্রাম্পের অভিযোগ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করে আসছে। পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনো কুইন্টেরো সাফ জানিয়েছেন, পানামা খালের ওপর চীনের কোনো প্রভাব নেই।
আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পানামা খাল সরাসরি চীনের নিয়ন্ত্রণে নয়। তবে হংকংভিত্তিক সিকে হাচিসন হোল্ডিংস করপোরেশন ১৯৯৭ সাল থেকে ক্যারিবীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরের প্রবেশমুখে থাকা দুটি বন্দর পরিচালনা করছে, যা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
প্রসঙ্গত, প্রশান্ত মহাসাগর ও আটলান্টিক মহাসাগরের মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী কৃত্রিম জলপথ পানামা খাল বৈশ্বিক বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। খালটি দিয়ে বছরে প্রায় ১৪ হাজার জাহাজ চলাচল করে, যা বৈশ্বিক বাণিজ্যের ২.৫ শতাংশ এবং মার্কিন কনটেইনারের ৪০ শতাংশ পরিবহন করে।
যুক্তরাষ্ট্রের জন্য পানামা খাল এশিয়া থেকে পণ্য আমদানি এবং তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসসহ অন্যান্য পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে খাল নিয়ে ট্রাম্পের বক্তব্যের ফলে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে উত্তেজনা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।