
ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রথম ভাষণে বলেছেন, “আজ থেকে আমেরিকার স্বর্ণযুগ শুরু হলো। আমাদের দেশ সমৃদ্ধ হবে এবং সারা বিশ্বে আবার সম্মানিত হবে। আমরা প্রতিটি জাতির অহংকারের কারণ হব।”
ভাষণে তিনি তার ওপর হত্যাচেষ্টার প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন। ট্রাম্প বলেন, “আমার বেঁচে থাকার একটি কারণ আছে, আর তা হলো আমেরিকাকে আবার মহান করা।” এটি তার নির্বাচনী স্লোগান ছিল—“মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন।”
শপথ অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা এবং প্রথম দিনের এজেন্ডা
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে শপথের দিন অন্তত ১০টি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষরের পরিকল্পনা রয়েছে। এগুলো হলো:
1. গণ অভিবাসন বন্ধ ও অবৈধ অভিবাসীদের বহিষ্কার:
ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধ অভিবাসীদের বের করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, “প্রথম দিনেই আমি আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অভিবাসী বহিষ্কার প্রোগ্রাম চালু করব।” তবে এই পদক্ষেপ নিয়ে অভিবাসন সমর্থকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
2. জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বন্ধ করা:
সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীর অধীনে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এটি আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।
3. ক্যাপিটল হিল হামলাকারীদের ক্ষমা:
২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিল হামলায় জড়িতদের ক্ষমা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ট্রাম্প বলেছেন, “প্রথম নয় মিনিটের মধ্যেই আমি তাদের ক্ষমা করব।”
4. রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান:
দায়িত্ব গ্রহণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, “পুতিন ও জেলেনস্কি আমাকে সম্মান করেন, তাই আমি দ্রুত সমাধান আনব।”
5. বাণিজ্যে শুল্ক আরোপ:
মেক্সিকো ও কানাডার মতো বাণিজ্যিক অংশীদারদের পণ্যের ওপর ২৫% শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা রয়েছে, যা অর্থনীতিবিদদের উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
6. ইলেকট্রিক ভেহিকল ম্যান্ডেট বাতিল:
ট্রাম্প ২০৩০ সালের মধ্যে কম কার্বন নিঃসরণকারী গাড়ি বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা বাতিল করবেন বলে জানিয়েছেন।
7. তেলকূপ খনন বৃদ্ধি:
তিনি আরও তেলকূপ খননের মাধ্যমে জ্বালানি উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছেন। পরিবেশবাদীরা এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
8. নারীদের খেলায় ট্রান্সজেন্ডারদের নিষিদ্ধ:
ট্রাম্প নারীদের খেলাধুলায় ট্রান্সজেন্ডার অ্যাথলেটদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করবেন বলে জানিয়েছেন।
9. জেন্ডার-অ্যাফার্মিং কেয়ার বন্ধ:
তরুণদের জন্য ট্রান্সজেন্ডার চিকিৎসা বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
10. মেড-ইন-আমেরিকা গাড়ি শিল্প পুনরুজ্জীবিত করা:
যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ি উৎপাদন ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির লক্ষ্যে দেশীয় গাড়ি শিল্পে বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ট্রাম্পের এই পরিকল্পনাগুলো তার সমর্থকদের মধ্যে আশা তৈরি করলেও বিরোধীদের মধ্যে উদ্বেগ ও বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।