১৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার
১লা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজায় যুদ্ধবিরতি ‘অস্থায়ী’, ফের যুদ্ধ শুরুর অধিকার আছে ইসরায়েলের

শেয়ার করুন

দীর্ঘ ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা বিধ্বংসী যুদ্ধের অবসানে ফিলিস্তিনের গাজায় অবশেষে কার্যকর হতে যাচ্ছে বহুল প্রত্যাশিত যুদ্ধবিরতি। রোববার (১৯ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।

তবে এই যুদ্ধবিরতিকে ‘অস্থায়ী’ বলে উল্লেখ করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তিনি দাবি করেছেন, প্রয়োজনে যুদ্ধ পুনরায় শুরু করার পূর্ণ অধিকার রয়েছে ইসরায়েলের। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থনে ইসরায়েল এই অধিকার পেয়েছে বলে তিনি জানান।

যুদ্ধবিরতির ঘোষণা ও প্রথম ধাপ:
মিসর, কাতার এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছেন, গাজায় রোববার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে।

চুক্তির প্রথম ধাপে স্থানীয় সময় বিকেল ৪টার মধ্যে ৭৩৭ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার কথা জানিয়েছে ইসরায়েলের বিচারবিষয়ক মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি, হামাসের হাতে বন্দি ৩৩ জনকে মুক্তি দেওয়া হবে। কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুলরহমান আল-থানি জানিয়েছেন, এই যুদ্ধবিরতি প্রাথমিকভাবে ৪২ দিনের জন্য কার্যকর থাকবে।

বাস্তুচ্যুতদের পুনর্বাসন ও ত্রাণ সহায়তা:
যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর ইসরায়েলি সেনারা গাজার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলো থেকে পূর্ব দিকে সরে যাবে। ফলে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা তাদের বাড়ি ফিরতে পারবেন। একই সঙ্গে প্রতিদিন ত্রাণবাহী শত শত ট্রাক গাজায় প্রবেশ করবে।

চুক্তির দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপ:
চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে বন্দিদের মুক্তি ও ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি আলোচনায় আসবে। তৃতীয় ধাপে গাজার পুনর্গঠনের কাজ শুরু হবে। তবে এই ধাপে হামাসের হাতে থাকা বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করাও আলোচনার অন্তর্ভুক্ত হবে।

ইসরায়েলের অবস্থান:
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠীর সঙ্গে চুক্তির ধাপগুলো বাস্তবায়িত না হলে ইসরায়েল পুনরায় হামলা শুরু করতে প্রস্তুত। পাশাপাশি, ফিলাডেলফি করিডোরে সেনা সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করা হবে বলে তিনি জানান।

এই চুক্তি স্বস্তি বয়ে আনলেও এর স্থায়িত্ব নিয়ে উদ্বেগ থেকেই যাচ্ছে। গাজাবাসী সাময়িক স্বস্তি পেলেও টেকসই শান্তির জন্য পরবর্তী ধাপগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

শেয়ার করুন