
গাজায় ইসরায়েলি অভিযানের প্রতি ডেমোক্র্যাট এবং বাইডেন প্রশাসনের সমর্থনের কারণে অনেক আরব-আমেরিকান ক্ষুব্ধ। সম্প্রতি গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকরে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভূমিকাকে তারা গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন।
পূর্ববর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিপুলভাবে ডেমোক্র্যাটদের সমর্থন করা অনেক আরব-আমেরিকান ভোটার এবারের নির্বাচনে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এবং ডেমোক্র্যাট দল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন। এর পেছনে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের প্রতি ডেমোক্র্যাটদের সমর্থনকে বড় কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
অনেক আরব-আমেরিকান ভোটার মনে করেন, নাজুক যুদ্ধবিরতির পরিস্থিতি উদযাপনের সময় এখনও আসেনি। তবে তারা বিশ্বাস করেন, ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ তাদের ডেমোক্র্যাটদের বিরোধিতা করার সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণ করেছে।
মিশিগান রাজ্যে এই ভোটের পরিবর্তন স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা গেছে। ডেট্রয়ট শহরের ডিয়ারবর্ন শহরতলির পূর্ব অংশ, যেখানে অধিকাংশ বাসিন্দা আরব-আমেরিকান, সেখানে কমলা হ্যারিস মাত্র ২০ শতাংশেরও কম ভোট পেয়েছেন। অধিকাংশ ভোটার ট্রাম্প অথবা গ্রিন পার্টির প্রার্থী জিল স্টেইনকে ভোট দিয়েছেন।
কমলা হ্যারিস দাবি করেছেন, তিনি এবং প্রেসিডেন্ট বাইডেন গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছেন। তবে, বাইডেন প্রশাসনের ইসরায়েলকে শর্তহীন অস্ত্র সরবরাহের প্রতিশ্রুতি এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের চারটি প্রস্তাবে ভেটো দেওয়ার কারণে ডেমোক্র্যাটদের বিরুদ্ধে আরব-আমেরিকানদের অসন্তোষ বৃদ্ধি পেয়েছে।
মিশিগানের হামট্রামিকের ইয়েমেনি-আমেরিকান মেয়র আমের গালিব, যিনি গত বছর ট্রাম্পকে সমর্থন করেছিলেন, বলেছেন, “গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য আলোচনা করা আমাদের শীর্ষ দাবি ছিল এবং ট্রাম্প এটি বুঝতে পেরেছিলেন।”
গালিব আরও বলেন, “আমরা তাকে সমর্থন করেছি কারণ তিনি শান্তি, ইসলামোফোবিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই, এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের ন্যায্য প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কিছু পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।”
এদিকে, বুধবার যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য ট্রাম্প এবং বাইডেন উভয়েই কৃতিত্ব দাবি করেছেন। তবে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রাম্পই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে চুক্তিতে সই করতে প্রভাবিত করেছিলেন। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, গাজায় ইসরায়েলি বন্দীদের মুক্তি এবং ইসরায়েলের হাতে আটক কয়েকশো ফিলিস্তিনি বন্দী মুক্তি পাবে।
তবে, এই চুক্তিতে ট্রাম্পের প্রকৃত ভূমিকা কতটুকু তা পুরোপুরি নির্ধারণ করা কঠিন।