
তীব্র শীতে কাঁপছে পঞ্চগড়, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
“ভোর সকালে কী যে ঠান্ডা, কপি কাটতে এসে হাত দুইটা যেন অবশ হয়ে আসছে। সারারাত কনকনে ঠান্ডা আর ভোরে ক্ষেতে বরফ শিশির।” এভাবেই তেঁতুলিয়া উপজেলার দর্জিপাড়া গ্রামের সবজি চাষি আজমির হোসেন শীতের তীব্রতা বর্ণনা করছিলেন।
উত্তরের হিমালয়কন্যা পঞ্চগড়ে কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা ৭ থেকে ১০ ডিগ্রির নিচে থাকায় মানুষ তীব্র শীতের কষ্টে রয়েছে। শনিবার (১১ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় রেকর্ড করা হয়েছে ৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। এর আগের দিন শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) একই সময়ে তাপমাত্রা ছিল ৭.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর বৃহস্পতিবার ছিল ৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্ভোগ
কনকনে শীতের কারণে ভ্যানচালক, দিনমজুর, পাথর শ্রমিক ও চা শ্রমিকদের কাজে যেতে সমস্যা হচ্ছে। তারা জানান, “বাতাসে মনে হচ্ছে বরফ ঝরছে। দিন আর রাতের তাপমাত্রা দুই রকম, ভোরে সূর্য উঠলেও হাড়কাঁপানো শীত কমছে না।”
পথচারী দারাজ আলী ও আমজাদ হোসেন বলেন, “আমরা তাপমাত্রা কত তা জানি না। তবে লেপ-কম্বল নিলেও ঠান্ডা কমছে না। মনে হচ্ছে তাপমাত্রা শূন্যের কাছাকাছি।”
কৃষি কাজে শীতের প্রভাব
সবজি চাষি আজমির হোসেন জানান, “সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত ঠান্ডা এত বেশি যে ক্ষেতে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। পাতায় পাতায় বরফ শিশির জমেছে। কপি কাটতে গিয়ে হাত অবশ হয়ে যাচ্ছে। তবুও কাজ করতে হচ্ছে।”
আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ বলেন, “এ অঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বইছে। শনিবার সকাল ৯টায় তাপমাত্রা ছিল ৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শীতের তীব্রতা আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকতে পারে।”
প্রভাব ও প্রস্তুতি
শীতের কারণে গৃহপালিত প্রাণীও কষ্ট পাচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন ও সহায়তাকারী সংস্থাগুলোর উচিত নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র বিতরণ ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া।