১৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার
১লা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কয়েকজন বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশনা রাষ্ট্রপতির

শেয়ার করুন

বিচারপতিদের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ রাষ্ট্রপতির, সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের কার্যক্রম শুরু আগামী সপ্তাহে

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সুপ্রিম কোর্টের কয়েকজন বিচারপতির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের জন্য সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলকে নির্দেশ দিয়েছেন। এই নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল আগামী সপ্তাহে তদন্ত শুরু করবে।

সোমবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে।

এর আগে সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে বিচারপতিদের আচরণ বিষয়ে তথ্য সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠায়। এ সংক্রান্ত প্রাথমিক অনুসন্ধানের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতির নির্দেশনায় আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু হবে।

পূর্বাপর প্রেক্ষাপট:

১৯৭২ সালের মূল সংবিধানে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে ছিল। তবে ১৯৭৫ সালের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে এই ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির কাছে স্থানান্তরিত হয়। পরবর্তীতে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে এ ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলকে দেওয়া হয়।

২০১৪ সালের ষোড়শ সংশোধনীতে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা আবারও সংসদের হাতে দেওয়া হয়। তবে ২০১৭ সালের ৩ জুলাই, তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির বেঞ্চ ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে। এর ফলে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের কার্যক্রম পুনঃপ্রবর্তিত হয়।

সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের গঠন ও কার্যক্রম:

সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল তিন সদস্যের হয়—প্রধান বিচারপতি এবং জ্যেষ্ঠ দুই বিচারপতি এর সদস্য।

কোনো বিচারকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে এই কাউন্সিল তা যাচাই-বাছাই করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রতিবেদন দাখিল করে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে রাষ্ট্রপতি সংশ্লিষ্ট বিচারককে পদ থেকে অপসারণের আদেশ দেন।

বর্তমান তদন্ত প্রক্রিয়া:

সুপ্রিম কোর্ট সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে একাধিক বিচারকের বিরুদ্ধে গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগ রয়েছে। ইতোমধ্যে তিনজন বিচারপতি পদত্যাগ করেছেন, এবং একজন অবসরে গেছেন।

রাষ্ট্রপতির নির্দেশনায় সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল এখন আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করবে। এই তদন্তের উদ্দেশ্যে কাউন্সিল নিজস্ব কার্যপদ্ধতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে এবং সুপ্রিম কোর্টের মতো একই পরোয়ানা জারি ও বাস্তবায়নের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে।

সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার পদক্ষেপটিকে আইনি প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে।

 

শেয়ার করুন