
সূর্য ওঠার আগেই লক্ষাধিক টাকার নিরাপদ সবজির বেচাকেনা
ভোর হওয়ার আগেই সরগরম হয়ে ওঠে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার চর ইশ্বর ইউনিয়নের নিরাপদ সবজি বাজার। কৃষকরা তাদের পরম যত্নে উৎপাদিত ফরমালিনমুক্ত ও কীটনাশকমুক্ত সবজি নিয়ে এই বাজারে উপস্থিত হন। মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যেই লাখ লাখ টাকার সবজি বেচাকেনা সম্পন্ন হয়।
কৃষকদের পরিশ্রমের ফসল
প্রতিদিন ভোরে হাতিয়ার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে কৃষকরা তাজা শাক-সবজি নিয়ে আসেন। পুঁইশাক, লাল শাক, ধুন্দল, শিম, বরবটি, মিষ্টিকুমড়া, লাউ, ধনেপাতাসহ নানা রকম শীতকালীন সবজি পাওয়া যায় এখানে। চাষি মো. আবু হোসেল কালু বলেন, “বাড়ির আঙিনায় উৎপাদিত নিরাপদ সবজিই এই বাজারের প্রধান আকর্ষণ। তবে উৎপাদন খরচ অনুযায়ী আমরা ন্যায্য মূল্য পাই না।”
চাষি বেলাল হোসেন বলেন, “এই বাজার হাতিয়ার সর্ববৃহৎ সবজির বাজার। আমাদের সবজিতে কোনো ক্ষতিকর উপাদান ব্যবহার করা হয় না। আমরা চাই সরকার আমাদের এই চেষ্টাকে মূল্যায়ন করুক।”
উন্নয়ন পরিকল্পনার দাবি
কৃষক মিরাজ হোসেন বলেন, “আমাদের উৎপাদিত সবজি হাতিয়ায় সীমাবদ্ধ। যদি বাইরে পাঠানো যেত, তাহলে কৃষকদের লাভ আরও বাড়তো।” আরেক চাষি মো. ফিরোজ হোসেন জানান, “এক একর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ করি। নিরাপদ সবজি কেনার জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে ক্রেতারা আসেন। তবে বাজার সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিলে কৃষকদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হতো।”
প্রশাসনের দৃষ্টি
হাতিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইবনে আল জায়েদ হোসেন বলেন, “চর ইশ্বর ইউনিয়নের সবজির বাজার একটি প্রাচীন বাজার। আমরা কৃষকদের নিরাপদ সবজি উৎপাদনে উদ্বুদ্ধ করার পরিকল্পনা করছি।”
হাতিয়ার এই সবজি বাজার শুধু একটি বাজার নয়, বরং নিরাপদ ও ফরমালিনমুক্ত সবজির একটি বিশেষ উদাহরণ। সরকারের সহযোগিতা পেলে এই উদ্যোগ আরও প্রসারিত হবে এবং কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পেতে সক্ষম হবেন।