১৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার
১লা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্যারাসিটামলে নষ্ট হতে পারে লিভার, কিডনি

শেয়ার করুন

জ্বর, মাথাব্যথা, বা গায়ে ব্যথার মতো সাধারণ সমস্যায় অনেকেই প্যারাসিটামল খেয়ে থাকেন। এটি সহজলভ্য ও সস্তা একটি ব্যথানাশক ওষুধ, যা প্রায় প্রতিটি ঘরেই মজুত থাকে। কিন্তু এই ওষুধটি ঘন ঘন এবং নির্ধারিত মাত্রার বেশি খাওয়ার অভ্যাস ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে বলে সতর্ক করেছেন ব্রিটেনের নটিংহাম ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা।

অতিরিক্ত প্যারাসিটামল সেবনের ঝুঁকি

গবেষকদের মতে, প্যারাসিটামল নির্ধারিত ডোজের বেশি খেলে বা দীর্ঘসময় ধরে নিয়ম ভেঙে সেবন করলে শরীরে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।

1. লিভার ও কিডনির ক্ষতি:

অতিরিক্ত ডোজে লিভারে চাপ সৃষ্টি করে, যা দীর্ঘমেয়াদে লিভার অকেজো হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।

কিডনির কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে এবং পাথর জমার আশঙ্কা বাড়ে।

 

2. পেটের সমস্যা:

লাগাতার প্যারাসিটামল সেবনে পেপটিক আলসার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

 

3. বমি ও মাথা ঘোরা:

বেশি মাত্রায় প্যারাসিটামল খেলে বমি বমি ভাব এবং মাথা ঘোরার সমস্যা দেখা দিতে পারে।

 

4. লিভার খারাপ হওয়ার লক্ষণ:

দীর্ঘমেয়াদে সেবনে ঘন হলুদ রঙের প্রস্রাব, তলপেটে ব্যথা, এবং লিভারের কার্যক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দেয়।

 

5. অ্যালার্জি ও উচ্চ রক্তচাপ:

কিছু ক্ষেত্রে অ্যালার্জি এবং উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাও বৃদ্ধি পায়।

 

গবেষণার ফলাফল

নটিংহাম ইউনিভার্সিটির সমীক্ষা:
গবেষণায় দেখা গেছে, ৫০-৬০ বছর বয়সীদের মধ্যে যারা কথায় কথায় প্যারাসিটামল সেবন করেন, তাদের মধ্যে পেপটিক আলসার, কিডনির ক্রনিক রোগ, এবং হার্টের অসুখের ঝুঁকি বেড়েছে।

‘দ্য ল্যানসেট’ গবেষণা (২০১৬):
সমীক্ষায় দেখা যায়, প্যারাসিটামল অনেক ক্ষেত্রেই ব্যথা উপশমে কার্যকর নয়।

গাঁটের ব্যথার ক্ষেত্রে কার্যকারিতা:
নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ওয়েইয়া ঝাং জানিয়েছেন, দীর্ঘমেয়াদে প্যারাসিটামল সেবন গাঁটের ব্যথা কমাতে তেমন কার্যকর নয়।

নিরাপদ ব্যবহারের নির্দেশনা

গবেষকদের মতে, প্যারাসিটামল নিরাপদ ওষুধ হলেও এটি নির্ধারিত ডোজে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করা উচিত।

দৈনিক সর্বোচ্চ ৩-৪ গ্রাম প্যারাসিটামল খাওয়া নিরাপদ।

প্রতি কেজি ওজন অনুযায়ী, ১০-১৫ মিলিগ্রাম ডোজ গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়।

ওষুধ সেবনের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

প্যারাসিটামল সঠিকভাবে ব্যবহৃত হলে এটি কার্যকর একটি ওষুধ। তবে অতিরিক্ত ডোজ বা লাগাতার সেবন ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। তাই ওষুধ সেবনের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা এবং প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

 

শেয়ার করুন