
স্মার্ট যুগে আমাদের জীবন এখন বেতার প্রযুক্তিনির্ভর। ইয়ারবাড, স্মার্টওয়াচ বা স্পিকার—সবই ব্লুটুথ ছাড়া অচল। কিন্তু এই সুবিধাজনক প্রযুক্তিই হতে পারে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের বড় মাধ্যম। সারাক্ষণ ব্লুটুথ চালু রাখলে বাড়ে হ্যাকিং ও সাইবার আক্রমণের ঝুঁকি।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, ব্লুটুথ ব্যবহারে ৫টি বড় ঝুঁকি ও সতর্কতার দিক।
১. ব্লুজ্যাকিং (Bluejacking)
এটি এমন এক সাইবার কৌশল যেখানে অচেনা কেউ ব্লুটুথ সংযোগের মাধ্যমে আপনার ডিভাইসে অবাঞ্ছিত বার্তা বা ফাইল পাঠায়। এতে গোপনীয়তা বিঘ্নিত হয় এবং সংবেদনশীল তথ্য অন্যের হাতে চলে যেতে পারে।
২. ব্লুস্নারফিং (Bluesnarfing)
এটি আরও ভয়াবহ। এই পদ্ধতিতে হ্যাকাররা আপনার ফোনের মেসেজ, ছবি, কনট্যাক্ট বা মাল্টিমিডিয়া ফাইল চুরি করতে পারে—আপনি টেরও পাবেন না যে তথ্য হাতছাড়া হয়ে গেছে।
৩. ব্লুবাগিং (Bluebugging)
ব্লুবাগিংয়ের মাধ্যমে হ্যাকাররা আপনার ডিভাইসের ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে। কল, মেসেজ এমনকি মাইক্রোফোন ব্যবহার পর্যন্ত মনিটর করতে সক্ষম হয়।
৪. এমআইটিএম ও ব্লুবোর্ন (MITM & BlueBorne)
এগুলো হলো ব্লুটুথ সংযোগের সবচেয়ে জটিল আক্রমণ।
-
MITM: হ্যাকার দুটি ডিভাইসের মাঝখানে অবস্থান নিয়ে তথ্য বিনিময়ে হস্তক্ষেপ করে।
-
BlueBorne: এমন এক দুর্বলতা যা কোটি কোটি ব্লুটুথ ডিভাইসে প্রভাব ফেলতে পারে—পাসওয়ার্ড পরিবর্তন বা তথ্য বিকৃত করাও সম্ভব হয়।
৫. দুর্বল এনক্রিপশন ও BLE ঝুঁকি
অনেক ব্লুটুথ ডিভাইস এখনও দুর্বল এনক্রিপশন বা ডিফল্ট পিন ব্যবহার করে। ফলে সহজেই ব্রুট-ফোর্স আক্রমণে হ্যাক করা যায়।
বিশেষত স্মার্টওয়াচ ও ফিটনেস ব্যান্ডের BLE ডিভাইসগুলোতে ডেটা ম্যানিপুলেশনের ঝুঁকি বেশি।
কীভাবে নিরাপদ থাকবেন
১. ব্লুটুথ ব্যবহার শেষে সবসময় বন্ধ রাখুন
২. অপরিচিত ডিভাইসের সঙ্গে পেয়ারিং এড়িয়ে চলুন
৩. প্রয়োজন ছাড়া ‘ডিসকভারেবল’ মোড অন রাখবেন না
৪. নিয়মিত সিকিউরিটি আপডেট ইনস্টল করুন
৫. পাবলিক জায়গায় ব্লুটুথ ব্যবহার সীমিত রাখুন
প্রযুক্তি যত উন্নত হচ্ছে, তথ্যচুরির ঝুঁকিও তত বাড়ছে। সামান্য অসতর্কতা আপনার ব্যাংক তথ্য, ব্যক্তিগত ছবি বা বার্তা অন্যের হাতে তুলে দিতে পারে। তাই ব্লুটুথ ব্যবহারেও সচেতন থাকুন—সুবিধা নিতে গিয়ে যেন বিপদ ডেকে না আনেন।
সিএনআই/২৫