
রাতে যথেষ্ট ঘুমিয়েও সকালে চোখ খোলার পর ঘুম ঘুম লাগে? আবার অ্যালার্ম বন্ধ করে কয়েক মিনিটের মধ্যেই ঘুমে তলিয়ে যান? অনেকেই মনে করেন, এটা অলসতার ফল বা বড় কোনো রোগের লক্ষণ। কিন্তু আসলে বিষয়টি শারীরিক ও মানসিক কয়েকটি কারণের সঙ্গে জড়িত হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, রাতে পর্যাপ্ত ঘুমের পরও দিনে বারবার ঘুম পাওয়া বা ক্লান্তি অনুভব করা একধরনের ঘুমজনিত ব্যাধি, যাকে বলা হয় ‘হাইপারসোমনিয়া’ (Hypersomnia)। এতে রাতে ভালো ঘুম হলেও দিনে অতিরিক্ত তন্দ্রা আসে, যা কাজের মনোযোগ কমিয়ে দেয় এবং দৈনন্দিন জীবন ব্যাহত করে।
অতিরিক্ত ঘুম বা ক্লান্তির সাধারণ কারণ
-
মানসিক চাপ ও বিষণ্নতা: উদ্বেগ বা মানসিক চাপ মস্তিষ্কে ঘুমের হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে, ফলে ঘুমের মান কমে যায়।
-
পুষ্টির ঘাটতি: শরীরে আয়রন, ভিটামিন বি১২ ও ভিটামিন ডি-এর অভাবে ক্লান্তি ও তন্দ্রা বাড়ে।
-
স্লিপ অ্যাপনিয়া: ঘুমের সময় শ্বাসরোধ হওয়ার কারণে ঘুম ভেঙে যায়, ফলে সকালে বিশ্রাম পাওয়া যায় না।
-
হরমোনজনিত সমস্যা: হাইপোথাইরয়েডিজম, ডায়াবেটিস বা কিডনি রোগের মতো সমস্যা ঘুম ও শক্তির ভারসাম্য নষ্ট করে।
-
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: স্টেরয়েড, অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট বা রক্তচাপের ওষুধের প্রভাবে ক্লান্তি দেখা দিতে পারে।
-
খাদ্যাভ্যাস: অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার ও ক্যাফেইন ঘুমের মান কমায়, শরীরের শক্তি হ্রাস করে।
-
পানিশূন্যতা: শরীরে পর্যাপ্ত পানি না থাকলে অক্সিজেন পরিবহন কমে গিয়ে ক্লান্তি সৃষ্টি করে।
-
স্থূলতা ও জীবনযাপন: ওজন বেড়ে গেলে ঘুমের মান কমে যায় এবং ঘুমঘুম ভাব সারাদিন স্থায়ী হয়।
কী করবেন?
-
প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানো ও জাগার অভ্যাস করুন।
-
ঘুমানোর আগে মোবাইল বা টিভির স্ক্রিন টাইম সীমিত করুন।
-
দিনে পর্যাপ্ত পানি পান করুন এবং পুষ্টিকর খাবার খান।
-
নিয়মিত ব্যায়াম করুন ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
-
দীর্ঘদিন স্থায়ী ক্লান্তি বা ঘুমঘুম ভাব থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
সিএনআই/২৫