১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার
১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘দেশ বাঁচাতে ঐক্য ধরে রাখতে হবে’ — প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস

শেয়ার করুন

দেশকে বাঁচাতে এবং গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে জাতীয় ঐক্য ধরে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, “আমাদের সামনে মহা চ্যালেঞ্জ। ঐক্যের বিকল্প নেই। এই ঐক্য হারালে রাষ্ট্র সংস্কারের পথ রুদ্ধ হয়ে যাবে।”

শনিবার (১ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান। তার প্রেস উইং থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

ড. ইউনূস বলেন, “যে অভূতপূর্ব ঐক্য আমাদের মাঝে গড়ে উঠেছে, সেটি ধরে রাখতে হবে। ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠী জাতিকে বিভক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। গত ১৫ মাস আমরা তাদের নানা ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করেছি। ফ্যাসিবাদ পরাস্ত করতে হলে জাতীয় ঐক্যই আমাদের শক্তি।”

তিনি বলেন, “এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা কোনো একক ব্যক্তি, সংগঠন বা সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। এজন্য সব রাজনৈতিক দল ও পক্ষকে একসঙ্গে থাকতে হবে, যত প্রতিকূলতাই আসুক না কেন ঐক্য অটুট রাখতে হবে।”

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাফল্যের প্রশংসা করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অবিরাম আলোচনা ও ঐকমত্যের মধ্য দিয়ে জুলাই জাতীয় সনদ প্রণয়ন একটি ঐতিহাসিক অর্জন। এই সনদ কেবল আগামী নির্বাচনকেই সুগম করবে না, বরং দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ পথনির্দেশক হিসেবেও কাজ করবে।”

তিনি বলেন, “জনগণ এখন এমন পরিবর্তনের অপেক্ষায়, যা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি বিকাশে সহায়তা করবে, নাগরিক অধিকার ও মর্যাদা রক্ষা করবে এবং স্বৈরাচারী রাজনীতির পুনরাবৃত্তি রোধ করবে।”

ড. ইউনূস উল্লেখ করেন, “আমরা নিজেরাই সংস্কারের পথ নির্ধারণ করেছি, বাইরের কেউ কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়নি। অতীতে বিদেশি মধ্যস্থতায় সংলাপ হয়েছে, কিন্তু এবার বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরাই সমাধানের পথ দেখিয়েছে। বিশ্ববাসীর সামনে আমরা আমাদের ঐক্যকে তুলে ধরেছি।”

তিনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “তারা অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন। জুলাই সনদ সারাবিশ্বে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। পৃথিবীর রাজনৈতিক ইতিহাসে এমন উদাহরণ বিরল।”

প্রধান উপদেষ্টা কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া এবং বিশেষ সহকারী মনির হায়দারসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এ ছাড়া গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতিও ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, “তারা মাসের পর মাস ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রম জনগণের কাছে সহজভাবে তুলে ধরেছেন। তাদের প্রচেষ্টায় জনগণ এই ঐক্যের প্রক্রিয়াকে বুঝতে ও গ্রহণ করতে পেরেছে।”

ড. ইউনূসের মতে, জুলাই জাতীয় সনদ শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, বরং সংকটকালীন রাষ্ট্র পুনর্গঠনের বিশ্বব্যাপী একটি অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

শেয়ার করুন