১৬ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার
৩১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

উত্তরের ৩ জেলা থেকে দূরপাল্লার বাস বন্ধ

শেয়ার করুন

শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর দাবিকে কেন্দ্র করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী ও নাটোর থেকে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী বাস চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে মালিকপক্ষ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে আজ শুক্রবার সকাল থেকে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।

এদিন সরেজমিনে শিরোইল বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, শত শত যাত্রী টিকিট কাউন্টারে এসে গন্তব্যে যেতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন। কাউন্টার থেকে টিকিটের টাকা ফেরত দিলেও দুর্গাপূজা ও ছুটির দিন সামনে থাকায় যাত্রীর চাপ বেড়েছে, কিন্তু পর্যাপ্ত পরিবহন পাচ্ছেন না তারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে রাজশাহী-ঢাকা রুটে চালক প্রতিটি ট্রিপে ১ হাজার ২৫০ টাকা, সুপারভাইজার ৫০০ টাকা এবং সহকারী ৪০০ টাকা পান। শ্রমিকদের আন্দোলনের পর গত ২৩ সেপ্টেম্বর ঢাকায় মালিক-শ্রমিক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, শুক্রবার থেকে চালককে ১ হাজার ৭৫০ টাকা, সুপারভাইজারকে ৭৫০ টাকা ও সহকারীকে ৭০০ টাকা দেওয়া হবে। কিন্তু নির্ধারিত দিন বাস্তবায়নের আগে মালিকপক্ষ বেশি টাকা দেওয়া সম্ভব নয় জানিয়ে হঠাৎ বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়।

মালিকপক্ষের দাবি, শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। এরপরও তারা অযৌক্তিক দাবি সামনে আনছেন যা মেনে নেওয়া সম্ভব না। শ্রমিকদের সঙ্গে না পেরে তারা নিজেরাই এবার বাস বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন।

বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বজলুর রহমান রতন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, শ্রমিকদের দাবির ব্যাপারে গত মঙ্গলবার ঢাকায় তাদের সঙ্গে বসা হয়েছিল। তাদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। সভায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। সভা সুন্দরভাবেই শেষ হয়। এরপর বাস চলাচলও শুরু হয়।

রতন বলেন, ‍‌‌এখন শ্রমিকরা দূরপাল্লার বাস যেখানে সেখানে থামিয়ে যাত্রী তুলতে চাচ্ছে। খোরাকি ভাতা দাবি করছে। যেখানে সেখানে বাস থামিয়ে যাত্রী তুললে তো ব্যবসা করা যাবে না। এটা নিয়ে তাদের সঙ্গে নতুন করে বিরোধ। তারা বাস চালাবে না বলেছে। আমরাও বলেছি- ঠিক আছে, এভাবে বাস চালাতে চাই না। কয়দিন বসে থাকবে থাকুক।’

শুধু একতা ট্রান্সপোর্টের বাস এবং লোকাল বাসগুলো চলাচল করছে বলে জানান বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি।

জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পাখি বলেন, ‘আলোচনার মাধ্যমে মালিক-শ্রমিক মিলে বাড়তি বেতন নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবায়নের আগেই ঘোষণা ছাড়াই বাস বন্ধ করা ন্যাক্কারজনক। এতে যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। মালিকপক্ষ যাত্রীদের সঙ্গে ছিনিমিনি খেলেছে।’

উল্লেখ্য, বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে গত ৭ সেপ্টেম্বর রাতে তিন জেলা থেকে দূরপাল্লার বাস চালানো বন্ধ করে দেন শ্রমিকরা। দুদিন পর মালিকপক্ষের আশ্বাসে তারা ফের বাস চালানো শুরু করেন। আশ্বাস অনুযায়ী, বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করা না হলে ২২ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে ফের কর্মবিরতি শুরু করেন তারা। ২৩ সেপ্টেম্বর বিকেল পর্যন্ত একতা ছাড়া বাকি সব বাস চলাচল বন্ধ ছিল।

শেয়ার করুন