১৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার
১লা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাহাবি আবু দারদা (রা.) যে চার উপদেশ দিয়েছেন

শেয়ার করুন

হজরত আবু দারদা (রা.): এক মহান জ্ঞানী, অশ্বারোহী ও বিচারক

হজরত আবু দারদা (রা.) ছিলেন আরবের অন্যতম শ্রেষ্ঠ জ্ঞানী, দক্ষ অশ্বারোহী এবং ন্যায়পরায়ণ বিচারক। তার মূল নাম আমির হলেও সাধারণত তিনি আবু দারদা নামেই পরিচিত ছিলেন, যা তার কন্যা দারদার নাম অনুসারে রাখা হয়েছিল। কিছু মানুষ তাকে উয়াইমির নামেও ডাকত।

তিনি মদিনার বিখ্যাত খাযরাজ গোত্রের বালহারিস শাখার সন্তান ছিলেন এবং রাসূল (সা.)-এর সমসাময়িক ছিলেন কিংবা কিছুদিনের ছোট ছিলেন। বন্ধু আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা (রা.)-এর পরামর্শে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন।

ইসলাম গ্রহণের চমকপ্রদ ঘটনা

আবু দারদা (রা.) ইসলাম গ্রহণের আগে মূর্তি পূজা করতেন। প্রতিদিন সকালে তিনি মূর্তিটিকে তেল ও সুগন্ধি মাখিয়ে রেশমী কাপড় দিয়ে ঢেকে দিতেন। একদিন তিনি দোকানে চলে গেলে তার বন্ধু আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা (রা.) তার বাড়িতে আসেন এবং সেখানে মূর্তিটি ভেঙে ফেলেন।

বাড়িতে ফিরে বিষয়টি শুনে আবু দারদা (রা.) প্রথমে ক্ষুব্ধ হন, কিন্তু পরে গভীরভাবে চিন্তা করে বুঝতে পারেন— যদি এই প্রতীমার মধ্যে সত্যিকারের কোনো শক্তি থাকত, তাহলে সেটি নিজেকে রক্ষা করতে পারত। এই উপলব্ধির পর তিনি রাসূল (সা.)-এর কাছে গিয়ে ইসলাম গ্রহণ করেন এবং নিজের পুরো জীবন ইসলামের পথে উৎসর্গ করেন।

ইসলামের প্রচার ও শিক্ষা

হজরত আবু দারদা (রা.) জ্ঞানচর্চা ও ইসলামের প্রচারে নিজেকে নিবেদন করেন। তিনি সবসময় মানুষকে ইলম অর্জনে উৎসাহিত করতেন এবং বলতেন—

*”তোমরা চার শ্রেণির একটি হও:
১. আলেম (জ্ঞানী),
২. তালিবে ইলম (জ্ঞান অন্বেষণকারী),
৩. আলেমদের প্রতি ভালোবাসা পোষণকারী,
৪. তাঁদের অনুসারী।

এর বাইরে পঞ্চম কিছু হয়ো না, নয়তো ধ্বংস হয়ে যাবে।”*

হজরত হাসান (রহ.)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, পঞ্চমটি কী? তিনি উত্তর দিয়েছিলেন— বিদআত। (হায়াতুস সাহাবা, ২/১৬০)

তিনি আরও বলতেন—
“জ্ঞানী ব্যক্তিদের সাহচর্য করা এবং তাদের সাথে ওঠাবসা করা একজন মানুষের প্রজ্ঞার পরিচায়ক।” (আসহাবে রাসূলের জীবনকথা, ৩/১৬০)

মৃত্যু ও শেষ উপদেশ

জীবনের শেষ সময়েও হজরত আবু দারদা (রা.) মানুষকে জ্ঞান অর্জন এবং ইসলামের পথে থাকার উপদেশ দেন। তিনি তার কর্ম ও শিক্ষার মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহর জন্য অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন।

 

শেয়ার করুন