
মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধের মধ্যে নির্বাচনের আয়োজন নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক বাহিনীর অভ্যুত্থানে নির্বাচিত বেসামরিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতা দখল করে জান্তা। এরপর থেকেই দেশটি গৃহযুদ্ধে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে, যেখানে বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী ও গণতন্ত্রপন্থি বাহিনীর সঙ্গে জান্তা বাহিনীর লড়াই চলছে। এই অবস্থায়, জান্তা সরকার নতুন নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, তবে এই নির্বাচনের পরিকল্পনা সহিংসতা বৃদ্ধি করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে।
গত দুই মাসে, জান্তা সরকার প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছে চলতি বছর নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে এবং ভোটার তালিকা প্রস্তুত করার জন্য আদমশুমারি পরিচালনার ফলাফলও প্রকাশ করেছে। তবে, গৃহযুদ্ধের মধ্যে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে অতিরিক্ত সহিংসতা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, বিশেষ করে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে জান্তার লড়াই চলতে থাকায়।
এছাড়া, জান্তা সরকারের শাসনামলে অনেক বিরোধী দল নিষিদ্ধ হয়েছে এবং নির্বাচনে শুধুমাত্র সামরিকপন্থি দলগুলো অংশ নিতে পারবে। এমন পরিস্থিতিতে, বিশ্লেষকরা জান্তার এই নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনাকে ধোঁকাবাজি হিসেবে দেখছেন।
এদিকে, আদমশুমারি রিপোর্টে বলা হয়েছে, দেশটির ৩৩০টি শহরের মধ্যে মাত্র ১৪৫টিতে আদমশুমারি পরিচালনা করা সম্ভব হয়েছে। এখনও নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়নি, তবে জান্তা সরকার চলতি বছরের শেষের দিকে নির্বাচনের আয়োজন করতে চায়।
মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে জান্তা বাহিনীর চলমান সংঘর্ষে সহিংসতা আরও বাড়তে পারে বলে সতর্কতা জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইনস্টিটিউট অব পিসের বিশ্লেষক ইয়ে মায়ো হেইন বলেন, “এই পদক্ষেপ মিয়ানমারের সংঘাতকে নজিরবিহীন স্তরে নিয়ে যাবে।”
বর্তমানে মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা চলছে, যার মেয়াদ জানুয়ারিতে শেষ হওয়ার কথা ছিল, তবে জান্তা সরকার এটি নতুন করে ছয় মাসের জন্য বাড়াতে পারে অথবা নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে পারে।