
১২ অক্টোবর ২০২৫, রংপুর:
আজ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর-এর ১৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। উত্তরের অবহেলিত জনপদের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি পূরণ করে ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিশ্ববিদ্যালয় শুরু থেকেই উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমে উন্নত জাতি গঠনের লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।
উপাচার্য ড. মো. শওকাত আলী বলেন, “শিক্ষা ও গবেষণায় আমরা একটি আধুনিক ও গবেষণামুখী বিশ্ববিদ্যালয় গঠনে বদ্ধপরিকর। স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে গবেষণাধর্মী শিক্ষক নিয়োগ, গবেষণা বরাদ্দ বৃদ্ধি, মাস্টার্স শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান, ডিন অ্যাওয়ার্ড চালু ও নিয়মিত রিসার্চ জার্নাল প্রকাশের মাধ্যমে আমরা গবেষণার পরিবেশকে সমৃদ্ধ করছি।”
তিনি আরও জানান, একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমের সম্প্রসারণে নতুন ভবন নির্মাণ, হল নির্মাণ, মাস্টার প্ল্যান প্রণয়নসহ বিভিন্ন প্রকল্প চলমান রয়েছে। আবাসিক হলগুলোতে অতীতে প্রচলিত দলীয় ছাত্র রাজনীতি ও সিট বাণিজ্য বন্ধে বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। বর্তমানে সিট বণ্টনে শতভাগ স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করা হয়েছে। দরিদ্র ও প্রান্তিক শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ উপবৃত্তি চালু রয়েছে।
ড. শওকাত আলী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের IQAC বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, কর্মশালা ও গবেষণাভিত্তিক কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষকদের দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করছে। শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব ও সাংগঠনিক চেতনা বিকাশে আমরা শিগগিরই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করছি। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথম সমাবর্তন আয়োজনের তারিখও ঘোষণা করা হয়েছে।”
গবেষণা সম্প্রসারণে বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যে বাংলা একাডেমির সহযোগিতায় বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের পৈতৃক বাড়িতে একটি গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে। উপাচার্যের মতে, “এ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা পেলে উত্তরবঙ্গ শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি বিষয়ক গবেষণার এক অনন্য কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠবে এবং গবেষকদের জন্য আবাসিক সুযোগও সৃষ্টি হবে।”
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা বর্তমানে দেশ-বিদেশে গবেষণা ও বিভিন্ন পেশায় সফলভাবে কাজ করছেন। সম্প্রতি ২৪ জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া আবু সাঈদ ছিলেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী—যিনি বৈষম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাহসিকতার প্রতীক হয়ে উঠেছেন।
উপাচার্য বলেন, “আমাদের শিক্ষার্থীরা আবু সাঈদের মতো সাহস ও ন্যায়ের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি প্রকৃত গবেষণামুখী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করবে—এটাই আমার দৃঢ় বিশ্বাস।”