
আমরা এখন অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি শক্তিশালী – ড. মুহাম্মদ ইউনূস
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “আমরা এখন অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি শক্তিশালী, উদ্যমী এবং সৃজনশীল। আমাদের তরুণ প্রজন্মের স্বপ্ন অতীতের যে কোনো প্রজন্মের তুলনায় আরও দুঃসাহসী। তারা যেমন নতুন বাংলাদেশ গড়তে চায়, তেমনি একই আত্মবিশ্বাসে নতুন পৃথিবী সৃষ্টি করার স্বপ্নও দেখে।”
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘একুশে পদক-২০২৫’ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. ইউনূস আরও বলেন, “আমাদের তরুণ প্রজন্ম নতুন পৃথিবী গঠনের নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত। তারা পুরনো, জীর্ণ-শীর্ণ, আত্মবিনাশী সভ্যতার গণ্ডি পেরিয়ে নতুন এক স্বপ্নের সমাজ গড়ে তুলতে চায়। এমন এক সমাজ, যেখানে পৃথিবীর সকল সম্পদের উপর প্রতিটি মানুষের সমান অধিকার থাকবে। প্রতিটি মানুষ তার স্বপ্ন দেখার এবং তা বাস্তবায়নের সমান সুযোগ পাবে। এমন এক পৃথিবী, যেখানে মানবসভ্যতার অগ্রগতি পৃথিবীর অস্তিত্বকে বিনষ্ট করবে না এবং সমস্ত জীবের সুস্থ ও টেকসই জীবনযাত্রা নিশ্চিত হবে।”
প্রধান উপদেষ্টা একুশে পদকপ্রাপ্ত গুণী ব্যক্তিদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, “আজ যারা একুশে পদক পেয়েছেন, তাদের প্রতি জাতির পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আপনাদের অবদান আমাদের জন্য দৃষ্টান্ত। আপনাদের পথ অনুসরণ করে জাতি আরও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে এবং বিশ্ব দরবারে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করবে।”
তিনি আরও বলেন, “৫ আগস্ট ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমাদের সামনে নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ এসেছে। আজকের এই অনুষ্ঠানে আমি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি সেই সকল সাহসী মানুষকে, যারা দেশমাতৃকার জন্য বিভিন্ন লড়াই-সংগ্রামে অংশ নিয়েছেন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের বীর শহীদদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা জানাই।”
“এবারের অমর একুশে আমাদের জন্য নতুন তাৎপর্য বহন করছে। একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের আত্মপরিচয়ের অবিনাশী স্মারক, আমাদের স্বাধিকার চেতনার প্রাণপ্রবাহ। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন শুধু ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেনি, এটি ছিল জাতীয় চেতনার এক বিরাট জাগরণ।”
“আজ মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে আমি আশা করি, আমাদের তরুণদের স্বপ্ন দ্রুত বাস্তবায়িত হবে। যারা আজ জাতির পক্ষ থেকে স্বীকৃতি পেয়েছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই এবং সবাইকে অভিনন্দন জানাই,” বলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।