১৫ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার
৩০শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিশ্ব হিজাব দিবস যেভাবে এল

শেয়ার করুন

সারা বিশ্বে মুসলিম নারীদের বিশেষ পরিচয়বাহী পোশাক হলো হিজাব বা মাথার স্কার্ফ। এটি মূলত মাথা ঢাকার কাপড় হিসেবে পরিচিত, যা ইসলাম ধর্মের পর্দার বিধান অনুযায়ী পরিধান করা হয়। তবে বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলোতে, হিজাব এখন মুসলিম নারীদের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ও আত্মপরিচয়ের প্রতীক হয়ে উঠেছে।

বিশ্বব্যাপী মুসলিম নারীরা বিভিন্ন ধরনের হিজাব পরেন, যা তাদের শালীনতা রক্ষা করতে এবং বিভিন্ন ধরনের হয়রানি থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করে। যদিও ইসলামের বিধান অনুযায়ী হিজাব পরিধান করা বাধ্যতামূলক নয়, তবে কিছু দেশে যেমন ইরান এবং ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশে এটি আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

বিশ্ব হিজাব দিবস প্রতি বছর ১ ফেব্রুয়ারি পালিত হয়, যা মুসলিম নারীদের হিজাব পরিধান এবং তাদের আত্মবিশ্বাসের প্রতি সম্মান জানাতে উৎসর্গিত। এটি শুধু মুসলিম নারীদের নয়, বরং বিভিন্ন ধর্ম ও পটভূমির নারীদের হিজাব পরিধানের মাধ্যমে ধর্মীয় সহনশীলতা ও বোঝাপড়া বৃদ্ধির লক্ষ্যও অর্জন করে।

হিজাব হলো এক ধরনের মাথার স্কার্ফ যা শুধু মাথা নয়, কখনও গলা পর্যন্ত ঢেকে রাখে। ‘হিজাব’ শব্দের অর্থ মূলত ‘পর্দা’ বা ‘বিভাজন’। এটি বিভিন্ন স্টাইল ও রঙে পরিধান করা যায়, এবং এখনকার যুগে অনেক মুসলিম নারী ফ্যাশনেবল হিজাব পরেন। ইসলামে হিজাব পরিধান করার বিধান রয়েছে মূলত রক্তের সম্পর্কীয় আত্মীয় ছাড়া অন্য পুরুষদের কাছে, তবে কিছু মুসলিম নারী সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় পরিচয় হিসেবে হিজাব পরিধান করেন।

২০১৩ সালে নিউইয়র্কের নাজমা খান প্রথম বিশ্ব হিজাব দিবসের উদ্যোগ নেন, যার উদ্দেশ্য ছিল ধর্মীয় সহনশীলতা বাড়ানো এবং হিজাব পরিধানকারী নারীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা। নাজমা তার স্কুলজীবনে হিজাব পরার কারণে বর্ণবৈষম্য এবং ইসলামফোবিয়ার শিকার হয়েছিলেন, বিশেষ করে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের পর এই ধরনের বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়েছিল। তাই তিনি এই দিনটি পালন শুরু করেন যাতে মুসলিম নারীদের সম্মানিত করা যায় এবং হিজাবের প্রতি ভুল ধারণা দূর করা যায়।

বর্তমানে ১৯০টিরও বেশি দেশে বিশ্ব হিজাব দিবস পালিত হয়। এই দিনে অংশগ্রহণের অন্যতম উপায় হলো হিজাব পরা এবং অন্যদেরকেও এর অভিজ্ঞতা অর্জনে উৎসাহিত করা। এছাড়া, হিজাবের বিভিন্ন ধরনের, যেমন নিকাব, বোরকা, শায়লা, খিমার এবং চাদর সম্পর্কে জানার সুযোগও রয়েছে। এবারের বিশ্ব হিজাব দিবসের থিম ছিল ‘#HijabisUnsilenced’, যার মাধ্যমে হিজাব পরিধানকারী নারীদের কণ্ঠস্বরকে আরো শক্তিশালী এবং সম্মানিত করার আহ্বান জানানো হয়।

নিউইয়র্কের সিনেট সম্প্রতি বিশ্ব হিজাব দিবসকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এই দিনটি পালনে বিভিন্ন ধরনের কর্মশালা, ওয়েবিনার, আলোচনা এবং অনলাইন প্রচারাভিযান আয়োজন করা হয়। এর মূল লক্ষ্য হলো মুসলিম নারীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন, ভুল ধারণা দূর করা এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সাংস্কৃতিক বোঝাপড়া বৃদ্ধি করা।

 

শেয়ার করুন