
পটুয়াখালীর কুয়াকাটার আলীপুর মৎস্য বন্দরে এক নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে। এফবি বিসমিল্লাহ-১ নামের একটি মাছ ধরার ট্রলার ১৯৫ মণ ইলিশ নিয়ে বন্দরে ফিরেছে, যা ৪০ লাখ ১৪ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে মেসার্স ফাইভ স্টার নামের একটি আড়তে মাছগুলো আনা হয়। ট্রলারটি গত ৬ জানুয়ারি ১৭ জন জেলে নিয়ে আলীপুর ঘাট থেকে গভীর সমুদ্রে ফিশিং করতে যায়। চার দিন ধরে কুয়াকাটা থেকে পূর্ব-দক্ষিণ দিকে ৯০ কিলোমিটার গভীর সমুদ্রে জাল ফেলে এই মাছ ধরা হয়।
মাছের ওজন ও দাম:
মাছগুলো তিনটি সাইজে আলাদা করা হয়:
৬০০-৮০০ গ্রাম ওজনের মাছ: প্রতি মণ ৪০,০০০ টাকা।
৪০০-৫০০ গ্রাম ওজনের মাছ: প্রতি মণ ২৫,০০০ টাকা।
ছোট সাইজের মাছ: প্রতি মণ ১৫,০০০ টাকা।
এছাড়া অন্যান্য প্রজাতির মাছ বিক্রি হয়েছে ৫৪,০০০ টাকায়।
ট্রলার মাঝি ও মালিকের অভিমত:
ট্রলারের মাঝি একলাস গাজী জানান, দীর্ঘদিন ধরে সমুদ্রে তেমন মাছ ধরা পড়ছিল না। তবে মহান আল্লাহর ইচ্ছায় এবার কাঙ্ক্ষিত মাছ পেয়েছেন। ট্রলারের মালিক খলিলুর রহমান খান বলেন, “অনেক দিন ধরে কম মাছ পাওয়ার কারণে লোকসান গুনতে হচ্ছিল। এই মাছ বিক্রি করে কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যাবে।”
মৎস্য আড়তের প্রতিক্রিয়া:
মেসার্স ফাইভ স্টার আড়তের পরিচালক নজরুল ইসলাম জানান, সাধারণত শীত মৌসুমে এত ইলিশ ধরা পড়ে না। অনেকদিন পর এত মাছ আসায় জেলে, ট্রলার মালিক ও আড়তদার সবাই খুশি। মাছগুলো ডাকের মাধ্যমে একাধিক পাইকারের কাছে বিক্রি হয়েছে।
মৎস্য কর্মকর্তার মন্তব্য:
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, শীত মৌসুম ইলিশের ভরা মৌসুম নয়। তবুও একটি ট্রলারে এত মাছ পাওয়া অবাক করার মতো। তিনি আরও বলেন, “বছরের দুইবার সমুদ্রে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা সঠিকভাবে মেনে চলার ফলে এ ধরনের সাফল্য পাওয়া যাচ্ছে।”
এই ঘটনা শুধু জেলে সম্প্রদায়ের জন্য নয়, দেশের সামগ্রিক মৎস্য খাতের জন্যও একটি বড় আশার খবর।