১৮ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার
২রা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আতশবাজি-ফানুসের তাণ্ডব চালিয়ে যান, প্রাণী হত্যার দায় আপনার’

শেয়ার করুন

বিদায় ২০২৪: নববর্ষ উদযাপন ও প্রাণী সংরক্ষণের বার্তা

আর মাত্র একদিন পরই বিদায় নেবে ইংরেজি বছর ২০২৪। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে অনেকেই উৎসবের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে এই উদযাপন মানুষের আনন্দের হলেও শিশুসহ অন্যান্য প্রাণীদের জন্য তা ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হয়ে দাঁড়ায়। আতশবাজির তীব্র শব্দ ও ফানুসের তাণ্ডব বিশেষত শিশুদের, পাখি, কুকুর, বিড়াল এবং অন্যান্য প্রাণীদের জন্য শারীরিক ও মানসিক বিপর্যয় ডেকে আনে।

অভিনেত্রী জয়া আহসানের সচেতনতা বার্তা

নববর্ষ উদযাপনকেন্দ্রিক এই প্রাণীর দুর্ভোগ নিয়ে সমাজে সচেতনতা তৈরি করতে দেশের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন কাজ করছে। শোবিজ অঙ্গনের তারকারাও এ বিষয়ে তাদের মতামত জানাচ্ছেন। তাদের মধ্যে একজন অভিনেত্রী জয়া আহসান।

সোমবার সকালে সামাজিক মাধ্যমে এক দীর্ঘ পোস্টে জয়া নববর্ষ উদযাপনের মাধ্যমে প্রাণীজীবনের ক্ষতির দিকটি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “মানুষের মতো পাখিদের কোনো ক্যালেন্ডার নেই। তারা থার্টি ফার্স্ট চেনে না। অন্য আর দশটা সন্ধ্যার মতো তারা ঘরে ফেরে, ঘুমিয়ে পড়ে এবং সকালে কিচিরমিচির করতে চায়। কিন্তু এই রাতে মানুষ তাদের স্বাভাবিক জীবনে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনে।”

পাখি এবং অন্যান্য প্রাণীর দুর্ভোগ

জয়া তার লেখায় তুলে ধরেন, আতশবাজি ও ফানুসের কারণে পাখিদের ঘুম ভেঙে যায়, আতঙ্কিত হয়ে তারা আকাশে উড়ে যায়, কিন্তু আকাশেও থাকে বিপদের আশঙ্কা। কোনো পাখি তীব্র শব্দে মারা যায়, কেউ আতশবাজির আগুনে পুড়ে বা আহত হয়ে বিল্ডিংয়ে ধাক্কা খেয়ে প্রাণ হারায়।

তিনি লেখেন, “পাখিদের মৃত্যুর কোনো ডেথ সার্টিফিকেট নেই। তাদের মৃত্যুর সংখ্যা হিসাব করার কেউ নেই। তাই মানুষের কাছে পাখির মৃত্যু হয়ত তুচ্ছ মনে হয়। কিন্তু প্রতিটি প্রাণের গুরুত্ব সমান হওয়া উচিত।”

শিশু ও অন্যান্য প্রাণীদের বিপদ

জয়া অতীতে আতশবাজির কারণে শিশুদের মৃত্যুর কথাও উল্লেখ করেন। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে আতশবাজির শব্দে শিশুটির মৃত্যু নিয়ে তিনি লেখেন, “চার মাস বয়সী উমায়ের আতশবাজির বিকট শব্দে মৃত্যু বরণ করে। নগরবাসীর উল্লাস কি সেই ছোট্ট শিশুটির জীবনের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ?”

তিনি বলেন, “আতশবাজি ও ফানুস শুধু পাখি নয়, কুকুর-বিড়াল, মুরগি, কীটপতঙ্গ এবং ডিমের ভেতর বাচ্চার জীবনও নষ্ট করে। এই প্রাণীগুলোর প্রতি একটু সহানুভূতিশীল হলে কি আমাদের আনন্দ কমে যাবে?”

সচেতনতার আহ্বান

জয়া আহসান তার পোস্টে নববর্ষ উদযাপনকে সীমিত রাখার এবং প্রাণীদের প্রতি মানবিক আচরণ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “উৎসবের নামে তাণ্ডব চালানোর সময় কি অসহায় প্রাণীগুলোর মুখগুলো আপনার মনে পড়বে? যদি মনে না পড়ে, বা মনে পড়ার পরও এই তাণ্ডব চালিয়ে যান, তবে জেনে রাখুন, এই প্রাণীহত্যার দায় আপনারও।”

সমাজের দায়িত্ব

জয়ার মতো ব্যক্তিত্বরা তাদের অবস্থান থেকে সচেতনতা ছড়ানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু এটি শুধু কয়েকজনের দায়িত্ব নয়। আমাদের সবার উচিত, এমন উদযাপন থেকে বিরত থাকা যা অন্য কোনো প্রাণীর জন্য বিপদ ডেকে আনে। নতুন বছর হোক সবার জন্য নিরাপদ এবং শান্তিপূর্ণ।

 

শেয়ার করুন