১৯শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার
৩রা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পোষ্য কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ছে ক্যাম্পাস থেকে ক্যাম্পাসে

শেয়ার করুন

মোঃ আয়নুল ইসলামঃ

বিভিন্ন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষায় ফেল করেও পোষ্য কোটায় ভর্তি হয়েছে অসংখ্য শিক্ষার্থী। জুলাই-আগস্টের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ফলে সরকারের পতনের পর এখন দাবি উঠেছে পোষ্য কোটা বাতিলের।

পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে প্রথম আন্দোলনের সূচনা হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে(রাবি)। প্রথমে রাবির শিক্ষার্থীরা ৭ ডিসেম্বরের (শনিবার) মধ্যে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবি আলটিমেটাম দেয়। এরপরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় আন্দোলনে নামেন তারা। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।

এর আগে, গত ১৪ নভেম্বর রাবির ভর্তি পরীক্ষায় তিন শতাংশ পোষ্য কোটা রেখে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেদিন রাতেই এই কোটা বাতিলের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। প্রায় ১৮ ঘণ্টা পর উপাচার্যের আশ্বাসে অনশন ভাঙেন তারা। পরে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীনকে সভাপতি করে ২০ সদস্যের কোটা পর্যালোচনা কমিটি গঠিত হয়।

এরপর, ৮ ডিসেম্বর (রবিবার) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটাকে ‘লাল কার্ড’ দেখিয়ে প্রতিবাদ জানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সিনেট ভবনের উত্তর পাশের প্যারিস রোডে পোষ্য কোটার একটি প্রতীকী দাফন এবং মোনাজাত করা হয়। শুধু তা–ই নয়, তাঁরা পোষ্য কোটার সেই ‘কবর’ ইট দিয়ে বাঁধাই করেছেন। ১৯৭৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা চালু হওয়ায় ৭৭টি ইট দিয়ে সেই ‘কবর’ পাকা করা হয়েছে।

এদিকে পোষ্য কোটার প্রতীকী সেই কবরের পাশে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে চলছে জুতা নিক্ষেপ কর্মসূচি। ‘সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়’-এর ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এবার অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন।

পোষ্য কোটা বাতিলসহ তিন দফা দাবিতে ১১ ডিসেম্বর (বুধবার) মানববন্ধন করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীরা।

এছাড়াও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন।

আন্দোলনকারীরা বলছেন, কোটা পিছিয়ে পরা জাতিগোষ্ঠীর জন্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তাদের সন্তানরা পিছিয়ে পরা জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত নয়। তাদের কোটা সুবিধা দেওয়া মানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে বৈষম্য করা।

তাই এই পোষ্য কোটা অনতিবিলম্বে বাতিলের দাবি জানাচ্ছেন তারা।

এখন দেখবার পালা যে বৈষম্য দূরীকরণের জন্য জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে এতো প্রাণহানী হলো তার উপর দাড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কি সিদ্ধান্ত নেয়।

লেখকঃ শিক্ষার্থী, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

শেয়ার করুন