১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার
১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যাকে নেতা বানালে আল্লাহর রাগ আসে, জানুন কারণ

শেয়ার করুন

ইসলামে নেতৃত্ব একটি পবিত্র দায়িত্ব, যা সমাজকে সত্য, ন্যায়, ঈমান এবং কল্যাণের পথে পরিচালিত করে। যোগ্য নেতৃত্ব জাতিকে উন্নতির দিকে নিয়ে যায়, আর ভুল নেতৃত্ব ফিতনা, অন্যায়, দুর্নীতি ও ঈমানের দুর্বলতা তৈরি করে। বিশেষত মুনাফিক বা প্রতারক ব্যক্তি নেতৃত্বে এলে আল্লাহর অসন্তুষ্টি হয়।

রাসুলুল্লাহ (স.)-এর নির্দেশনা:
নবীজি (স.) বলেছেন, “মুনাফিককে সাইয়্যিদ (নেতা) বলে ডেকো না। কারণ যদি সে নেতা হয়, তাহলে আল্লাহকে রাগান্বিত করেছ।” (সুনানে আবু দাউদ: ৪৯৭৭)
এ থেকে বোঝা যায়, নেতৃত্বের মর্যাদা ও সম্মান এমন একটি স্থান যেখানে মুনাফিককে বসানো মানে সত্যকে অপমান করা এবং আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করা।

কোরআনে মুনাফিকদের বৈশিষ্ট্য:

  1. মিথ্যাবাদী: “নিশ্চয় মুনাফিকরা মিথ্যাবাদী।” (সুরা মুনাফিকুন: ১)

  2. দ্বিমুখী চরিত্র: মুমিনদের কাছে ঈমান দেখায়, অন্যদের কাছে সমর্থন। (সুরা বাকারা: ১৪)

  3. অহংকারী ও সত্য গ্রহণে অনিচ্ছুক। (সুরা মুনাফিকুন: ৫)

  4. সমাজে ফ্যাসাদ ছড়ায়। (সুরা বাকারা: ১১)

  5. পরিণতি জাহান্নামের নিম্নস্তরে। (সুরা নিসা: ১৪৫)

হাদিসে মুনাফিককে নেতা বানানোর ক্ষতি:

  • সমাজ বিভ্রান্ত হয়: সুন্দর কথা বললেও অন্তর নষ্ট। (মুসনাদে আহমদ: ৩১০)

  • অযোগ্য নেতৃত্ব আল্লাহর রাগ ডাকে। (সহিহ আল-জামে: ৬০১৮)

সঠিক নেতৃত্বের গুণাবলী:

  1. আল্লাহভীরু ও তাকওয়াবান (সুরা হুজরাত: ১৩)

  2. আমানতদার (বুখারি: ৫৯)

  3. ন্যায়পরায়ণ (সুরা মায়েদা: ৮)

  4. সত্যবাদী ও দ্বীনদার

  5. প্রজ্ঞাবান ও জ্ঞানী (সুরা বাকারা: ২৪৭)

  6. দৃঢ়চিত্ত ও সাহসী (বুখারি: ৭২০০)

মুনাফিককে নেতা বানানোর ক্ষতিকর প্রভাব:

  • আল্লাহর অসন্তুষ্টি

  • সমাজে ফিতনা ও দুর্নীতি বৃদ্ধি

  • সত্য ও ন্যায়ের পতন

  • মুমিনদের মনোবল ক্ষুণ্ণ

  • ঈমান ও আদর্শে ক্ষতি

ইসলাম নেতৃত্বকে ইবাদত ও আমানত হিসেবে দেখেছে। মুনাফিক, প্রতারক বা দ্বিমুখী মানুষকে কখনোই নেতৃত্ব দেওয়া উচিত নয়। সৎ, ঈমানদার ও যোগ্য নেতৃত্ব সমাজ, জাতি ও ঈমানকে রক্ষা করে। আল্লাহ আমাদের মুনাফিকদের নেতৃত্ব থেকে রক্ষা করুন এবং নেক ও যোগ্য নেতৃত্ব দান করুন। আমিন।

সিএনআই/২৫

শেয়ার করুন