
ইসলামে নেতৃত্ব একটি পবিত্র দায়িত্ব, যা সমাজকে সত্য, ন্যায়, ঈমান এবং কল্যাণের পথে পরিচালিত করে। যোগ্য নেতৃত্ব জাতিকে উন্নতির দিকে নিয়ে যায়, আর ভুল নেতৃত্ব ফিতনা, অন্যায়, দুর্নীতি ও ঈমানের দুর্বলতা তৈরি করে। বিশেষত মুনাফিক বা প্রতারক ব্যক্তি নেতৃত্বে এলে আল্লাহর অসন্তুষ্টি হয়।
রাসুলুল্লাহ (স.)-এর নির্দেশনা:
নবীজি (স.) বলেছেন, “মুনাফিককে সাইয়্যিদ (নেতা) বলে ডেকো না। কারণ যদি সে নেতা হয়, তাহলে আল্লাহকে রাগান্বিত করেছ।” (সুনানে আবু দাউদ: ৪৯৭৭)
এ থেকে বোঝা যায়, নেতৃত্বের মর্যাদা ও সম্মান এমন একটি স্থান যেখানে মুনাফিককে বসানো মানে সত্যকে অপমান করা এবং আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করা।
কোরআনে মুনাফিকদের বৈশিষ্ট্য:
-
মিথ্যাবাদী: “নিশ্চয় মুনাফিকরা মিথ্যাবাদী।” (সুরা মুনাফিকুন: ১)
-
দ্বিমুখী চরিত্র: মুমিনদের কাছে ঈমান দেখায়, অন্যদের কাছে সমর্থন। (সুরা বাকারা: ১৪)
-
অহংকারী ও সত্য গ্রহণে অনিচ্ছুক। (সুরা মুনাফিকুন: ৫)
-
সমাজে ফ্যাসাদ ছড়ায়। (সুরা বাকারা: ১১)
-
পরিণতি জাহান্নামের নিম্নস্তরে। (সুরা নিসা: ১৪৫)
হাদিসে মুনাফিককে নেতা বানানোর ক্ষতি:
-
সমাজ বিভ্রান্ত হয়: সুন্দর কথা বললেও অন্তর নষ্ট। (মুসনাদে আহমদ: ৩১০)
-
অযোগ্য নেতৃত্ব আল্লাহর রাগ ডাকে। (সহিহ আল-জামে: ৬০১৮)
সঠিক নেতৃত্বের গুণাবলী:
-
আল্লাহভীরু ও তাকওয়াবান (সুরা হুজরাত: ১৩)
-
আমানতদার (বুখারি: ৫৯)
-
ন্যায়পরায়ণ (সুরা মায়েদা: ৮)
-
সত্যবাদী ও দ্বীনদার
-
প্রজ্ঞাবান ও জ্ঞানী (সুরা বাকারা: ২৪৭)
-
দৃঢ়চিত্ত ও সাহসী (বুখারি: ৭২০০)
মুনাফিককে নেতা বানানোর ক্ষতিকর প্রভাব:
-
আল্লাহর অসন্তুষ্টি
-
সমাজে ফিতনা ও দুর্নীতি বৃদ্ধি
-
সত্য ও ন্যায়ের পতন
-
মুমিনদের মনোবল ক্ষুণ্ণ
-
ঈমান ও আদর্শে ক্ষতি
ইসলাম নেতৃত্বকে ইবাদত ও আমানত হিসেবে দেখেছে। মুনাফিক, প্রতারক বা দ্বিমুখী মানুষকে কখনোই নেতৃত্ব দেওয়া উচিত নয়। সৎ, ঈমানদার ও যোগ্য নেতৃত্ব সমাজ, জাতি ও ঈমানকে রক্ষা করে। আল্লাহ আমাদের মুনাফিকদের নেতৃত্ব থেকে রক্ষা করুন এবং নেক ও যোগ্য নেতৃত্ব দান করুন। আমিন।
সিএনআই/২৫