১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার
১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শরিকদের আসন নিয়ে বিএনপির নতুন সমীকরণ

শেয়ার করুন

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ২৩৭ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করলেও এখনো জোটের মনোনয়ন চূড়ান্ত করেনি বিএনপি। এতে জোট শরিকদের মধ্যে দ্বিধা ও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তারা বিএনপি মহাসচিবসহ শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানই আসন বণ্টন নিয়ে শেষ সিদ্ধান্ত দেবেন বলে জানানো হয়েছে।

বিএনপি সূত্র বলছে, শিগগিরই তারেক রহমান শরিকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করবেন। এরপরই কোন দল কোন আসনে নির্বাচন করবে তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দেওয়া হবে। তবে এবার আসন বণ্টনে নতুন চিন্তা করছে বিএনপি—মিত্রদের আসন সীমিত রেখে প্রয়োজনে সংসদের উচ্চকক্ষসহ অন্যভাবে মূল্যায়ন করা হতে পারে।

গত ৩ নভেম্বর ৩০০ আসনের মধ্যে ২৩৭-এ সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে বিএনপি। বাকি ৬৩টি আসন খালি রেখে সেটির কিছু অংশ জোটের জন্য বরাদ্দ করার ইঙ্গিত দেওয়া হয়। কিন্তু প্রায় এক মাস পেরোলেও এখনো সেই আসনগুলোর বিষয়ে কোনো ঘোষণা আসেনি। ফলে শরিকদের পাশাপাশি এসব আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরাও মাঠে সক্রিয় থাকায় তৃণমূলেও বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।

ফ্যাসিবাদবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের মিত্রদের সবকিছু সাথে নিয়ে নির্বাচন ও সরকার গঠনের অঙ্গীকার রয়েছে বিএনপির। ইতোমধ্যে এই মিত্ররা তাদের ১৬৮ জন প্রার্থীর তালিকা জমা দিয়েছে। তবে তালিকা নেওয়ার পরও শরিকদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেনি বিএনপি।

জানা গেছে, গণফোরামের জন্য ঢাকা-৭ ও নরসিংদী-৩, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুরের জন্য পটুয়াখালী-৩ এবং রাশেদ খানের জন্য ঝিনাইদহ-২ আসন ছেড়ে দিতে পারে বিএনপি। এলডিপি, ১২-দল, নাগরিক ঐক্য, বিএনপি-সমমনা জোট, জেএসডি ও অন্যদের জন্যও বেশ কয়েকটি আসন বিবেচনায় রয়েছে। অনেক আসনই এখনো খালি রাখা হয়েছে সম্ভাব্য সমঝোতার কারণে।

তবে কিছু আসনে BNP–এর গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের কারণে জটিলতা তৈরি হয়েছে। যেমন—ঢাকা-৮-এ সাইফুল হককে চাইলেও সেখানে ইতোমধ্যে মির্জা আব্বাসকে প্রার্থী করেছে বিএনপি। একই সংকট দেখা দিচ্ছে আরও কয়েকটি আসনে।

বিএনপি মনে করছে, এবার মিত্রদের জন্য কম আসন দেওয়ার সম্ভাবনা আছে—২০ থেকে ২৫টির মতো। ২০১৮ সালে জামায়াতকে ২২ আসন দিলেও এবার তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবেই দেখছে বিএনপি। পাশাপাশি সংশোধিত আরপিও অনুযায়ী, জোটভুক্ত দলগুলোকে নিজ নিজ প্রতীকে লড়তে হবে—এটিও বিএনপির জন্য বিবেচ্য। মিত্ররা ধানের শীষের প্রতীকে লড়তে না পারলে তাদের বিজয়ের সম্ভাবনা কমে যেতে পারে বলে মনে করছেন বিএনপির অনেকে।

এদিকে এনসিপি ও কয়েকটি ইসলামী দলকেও জোটে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে। সে কারণেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কয়েকটি আসন খালি রাখা হয়েছে। তবে এখনো কোনো চূড়ান্ত অগ্রগতি হয়নি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন জানিয়েছেন, কিছু আসন শরিকদের জন্য ছাড়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে। সিদ্ধান্ত নেবেন তারেক রহমান।

সিএনআই/২৫

শেয়ার করুন