
রাজশাহীতে ভয়াবহ এক হত্যাকাণ্ডে রাজশাহী মহানগর ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আবদুর রহমানের বাসায় ঢুকে তার ছেলে, তাওসিফ রহমান সুমন (১৮),কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিচারকের স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসি গুরুতর আহত হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনাটি বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) নগরীর ডাবতলা এলাকায় স্পার্ক ভিউ নামের ১০তলা ভবনের পঞ্চম তলায় ঘটে, যেখানে পরিবারটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। হামলার পর পুলিশ মো. লিমন মিয়া (৩৫) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে। লিমন গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার মদোনের পাড়া গ্রামের হেমায়েত মিয়া সোলায়মান শাহিদের ছেলে এবং তিনি সেনাবাহিনীতে সিপাহী হিসেবে কর্মরত ছিলেন; চার বছর চাকরি করার পর চাকরিচ্যুত হন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, লিমন এবং তাসমিন নাহারের পরিচয় কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে হয়। দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে সম্পর্ক ছিল, তবে সম্প্রতি মনোমালিন্য দেখা দেয়। তাসমিন নাহার লুসি গত ৬ নভেম্বর জালালাবাদ থানায় মো. লিমন মিয়াকে হুমকির অভিযোগে জিডি করেন। লিমন পরবর্তীতে সিলেটে গিয়ে তাকে উত্ত্যক্ত করলে স্থানীয়রা গণধোলাই দেয়। এর পর থেকে লিমনের আচরণ প্রতিশোধপ্রবণ হয়ে ওঠে। ঘটনার দিন লিমন বিচারকের বাসায় ঢুকে তাসমিনের সঙ্গে কথাবার্তা চালাতে গেলে বাকবিতণ্ডা সৃষ্টি হয়, যা দ্রুত হাতাহাতিতে পরিণত হয়। তাওসিফ তার মাকে রক্ষা করতে এগিয়ে গেলে হামলাকারী তাকেও কুপিয়ে হত্যা করে। হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাওসিফের মৃত্যু হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, লিমনের মোবাইল ও অন্যান্য ডিজিটাল ডিভাইস জব্দ করা হয়েছে এবং সেগুলোর বিশ্লেষণের মাধ্যমে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ চিত্র উন্মোচন করা হবে। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, হামলার পেছনে ব্যক্তিগত শত্রুতা এবং সম্পর্কের মনোমালিন্য কাজ করেছে। নিহত তাওসিফ রহমান রাজশাহী সরকারি ল্যাবরেটরি স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। আহত তাসমিন নাহারের অবস্থা গুরুতর হলেও স্থিতিশীল। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকলকে গ্রেপ্তার ও ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে কাজ চলছে।
সিএনআই/২৫