১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার
১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঢাকায় ওয়াসার পানিতে পোকা ও দুর্গন্ধ, ভোগান্তিতে নগরবাসী

শেয়ার করুন

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ওয়াসার সরবরাহ করা পানি ঘোলা, দুর্গন্ধযুক্ত ও পোকায় ভরা হয়ে পড়েছে। এমনকি ফুটিয়েও এই পানি পানযোগ্য নয় বলে অভিযোগ করেছেন বাসিন্দারা। ফলে বাধ্য হয়ে রান্না, গোসল, ও দৈনন্দিন কাজে এই পানি ব্যবহার করতে গিয়ে নানান স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন মানুষ, বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা।

জুরাইন, কল্যাণপুর, মানিকনগর, ডেমরা, কুতুবখালী, শনির আখড়া, মোহাম্মদপুর, তেজগাঁও, মালিবাগ, মগবাজার, মধুবাগ, বাসাবো, খিলগাঁও, শ্যামপুর, আজিমপুর ও লালবাগসহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা কয়েক মাস ধরেই ওয়াসার পানিতে ময়লা ও দুর্গন্ধের অভিযোগ জানিয়ে আসছেন।

ওয়াসার কয়েকজন কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন, কিছু এলাকায় সরবরাহ করা পানিতে পোকা পাওয়া গেছে। তাদের ধারণা, সায়েদাবাদ পানি শোধনাগারে প্রযুক্তিগত ত্রুটি থেকে এ সমস্যা হতে পারে। তবে এখনো কোনো স্থায়ী সমাধান হয়নি।

কল্যাণপুরের বাসিন্দা হাফিজুর রহমান বলেন, “ওয়াসায় অভিযোগ করেও কোনো ফল পাই না। তারা শুধু বলে ট্যাংক পরিষ্কার করুন। অথচ আমাদের ট্যাংক পরিষ্কারই থাকে।”

মোহাম্মদপুরের শেখেরটেক এলাকার বাসিন্দা সিদ্দিকুর রহমান জানান, “ওয়াসার পানিতে কালো রঙের ঘোলা পানি আসে, তাতে পোকাও দেখা যায়। তাই বাধ্য হয়ে কিনে পানি খাই।”

আজিমপুরের বাসিন্দা নাদিম আহমেদ বলেন, “ওয়াসা শুধু পরামর্শ দেয় ফিল্টার ব্যবহার করতে, কিন্তু সমস্যার সমাধান করে না।”

জুরাইন এলাকায় সমস্যা আরও ভয়াবহ। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তারা ওয়াসার পানি ব্যবহার করতে না পেরে মসজিদের গভীর নলকূপ থেকে পানি সংগ্রহ করছেন।

নাগরিক অধিকারকর্মী মিজানুর রহমান বলেন, “এক যুগ ধরে জুরাইনে নিরাপদ পানির সংকট চলছে, কিন্তু কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।”

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. এম এইচ চৌধুরী লেনিন বলেন, “দূষিত পানি পান করলে টাইফয়েড, প্যারাটাইফয়েড ও ডায়রিয়ার ঝুঁকি বাড়ে। দ্রুত সমাধান না হলে এটি মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে।”

ঢাকা ওয়াসার এক কর্মকর্তা জানান, “রাজধানীতে ৩৮৮টি গভীর নলকূপ প্রতিস্থাপনের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এতে কিছু এলাকায় সংকট কমবে।”

ওয়াসার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ) মো. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, “অভিযোগ পেলে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেই। তবে অনেক ক্ষেত্রে গ্রাহকের ট্যাংক অপরিষ্কার থাকার কারণেও সমস্যা হয়। কোথাও লিকেজ বা চোরাই লাইন থাকলে সেটিও পানির দূষণের কারণ হতে পারে।”

সিএনআই/২৫

শেয়ার করুন