১লা ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার
১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১০০ বিলিয়নের জলবায়ু তহবিল নিয়ে আলোচনা চললেও বাস্তবায়নে ঘাটতি রয়েছে:পরিবেশ উপদেষ্টা

শেয়ার করুন

পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, বহু বছর ধরে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বৈশ্বিক জলবায়ু তহবিল নিয়ে আলোচনা চলছে, কিন্তু বাস্তবে এর প্রয়োগে এখনও বড় ঘাটতি রয়েছে। তার মতে, শুধু প্রতিশ্রুতি নয়—এখন প্রয়োজন প্রকৃত সহায়তা, যাতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো টেকসইভাবে টিকে থাকতে পারে।

রোববার (২৬ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ‘কপ-৩০ সম্মেলনের খসড়া অবস্থানপত্র’ বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, জলবায়ু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বৈশ্বিক আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা এখন সময়ের দাবি। তিনি বলেন, ১০০ বিলিয়ন ডলারের জলবায়ু তহবিল নিয়ে দীর্ঘদিন আলোচনা চলছে, কিন্তু এর বাস্তবায়নে এখনো ঘাটতি রয়েছে। প্রতিশ্রুত অর্থের প্রকৃত প্রবাহ নিশ্চিত না হলে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো টেকসই উন্নয়নের পথে এগোতে পারবে না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করতে প্রশাসনের ভেতরে গবেষণা, নীতি প্রণয়ন ও কার্যকর কর্মপরিকল্পনা তৈরি জরুরি। আমরা অনেক কিছু শিখেছি, কিন্তু জলবায়ু ন্যায়বিচার, অর্থায়ন, পূর্বাভাস এবং শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষার ক্ষেত্রে আরও সক্রিয় হতে হবে। প্রতিবাদ ও ভালোবাসা থাকলেও বাস্তবায়নের ঘাটতি রয়ে গেছে, তাই এখন সমন্বিত উদ্যোগই একমাত্র পথ।

জলবায়ু উপদেষ্টা আরও বলেন, জলবায়ু আলোচনায় আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদার করতে বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালকে নিয়ে একটি কার্যকর সহযোগী কাঠামো গঠন করা গেলে তা হবে অত্যন্ত ইতিবাচক পদক্ষেপ। পরিকল্পিত যোগাযোগ, তথ্য বিনিময় ও যৌথ উদ্যোগ জলবায়ু কূটনীতিকে আরও শক্তিশালী করবে।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন অনুবিভাগ) মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ, জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত, যুগ্মসচিব ধরিত্রী কুমার সরকার এবং পরিচালক মির্জা শওকত আলী।

সঞ্চালনা করেন অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ। আলোচনায় দেশের বিভিন্ন জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশকর্মীরা বলেন, আসন্ন কপ-৩০ সম্মেলনে বাংলাদেশের উচিত শুধু ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে নয়, সমাধান প্রস্তাবকারী দেশ হিসেবেও নিজেদের উপস্থাপন করা। তাঁরা ন্যায্য অর্থায়ন, অভিযোজন পরিকল্পনা এবং প্রযুক্তিগত সহায়তায় দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান।

এর আগে উপদেষ্টা রাজধানীর ইস্কাটনে এক গোলটেবিল বৈঠকে পরিবেশবান্ধব নির্মাণশৈলীর গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, টেকসই শিল্পায়ন মানে শুধু উৎপাদন নয়, পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করাও তার অপরিহার্য অংশ।

পরে তিনি আগারগাঁওয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরে আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিলের (আইএফএডি) কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. ভ্যালেন্টাইন আচনচোর সঙ্গে বৈঠক করেন।

শেয়ার করুন