
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় শুনতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নেতারা। সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকালেই ট্রাইব্যুনালে দেখা গেছে ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম, জিএস এসএম ফরহাদ, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদী, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহতরা এবং কয়েকজন জুলাইযোদ্ধা রাকিব হাওলাদার, নিয়ামুলসহ অন্যান্যরা।
ত্রাইব্যুনালের পাশেই বসেছেন ছাত্রদল সমর্থিত সাবেক ডাকসু ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান ও জিএস প্রার্থী শেখ তানভীর বারী হামীম।
বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ রায় পড়া শুরু করেছেন। অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এই মামলায় পলাতক রয়েছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে প্রিজনভ্যানে কারাগার থেকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।
শেখ হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ, র্যাব, এপিবিএন-বিজিবি এবং সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। তৎপর গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও নজরদারিতে আছে।
মামলায় মোট ২৮ কার্যদিবসে ৫৪ জন সাক্ষীর জেরা সম্পন্ন হয়েছে। ৯ কার্যদিন ধরে প্রসিকিউশন ও ডিফেন্সের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের দিন নির্ধারণ করা হয়। প্রসিকিউশন শেখ হাসিনা ও কামালের সর্বোচ্চ সাজা দাবি করেছে। রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি মামুনের ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনাল সিদ্ধান্তের ওপর ছাড়া দেওয়া হয়েছে, যদিও তার খালাস চাওয়া হয়েছে।
মামলায় পাঁচটি মানবতাবিরোধী অভিযোগ আনা হয়েছে—উসকানি, মারণাস্ত্র ব্যবহার, আবু সাঈদ হত্যা, চানখাঁরপুলে হত্যা এবং আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানো। আনুষ্ঠানিক অভিযোগের নথি ৮,৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠা, জব্দ তালিকা ও প্রমাণাদি ৪,০৫ পৃষ্ঠা এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ ২,৭২৪ পৃষ্ঠা। ৮৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
সিএনআই/২৫