
আজকের ফিটনেস ও বডিবিল্ডিং–কেন্দ্রিক সময়ে প্রোটিনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সচেতনতা অনেক বেড়েছে। মাছ, মাংস ও ডিমসহ প্রাণিজ উৎসের প্রোটিন শরীরের পেশি গঠন, হাড়ের দৃঢ়তা, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা এবং দেহের নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য অপরিহার্য। তবে সাম্প্রতিক সময়ে অনেকেই প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ করছেন, যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে—এ কি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়?
প্রোটিন নিজে হৃদরোগ সৃষ্টি করে না; বরং এর উৎস, চর্বির মাত্রা এবং সামগ্রিক খাদ্যাভ্যাসের ওপরেই ঝুঁকি নির্ভর করে।
লাল মাংস ও প্রক্রিয়াজাত মাংসে স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও সোডিয়াম বেশি থাকে। নিয়মিত অতিরিক্ত গ্রহণে রক্তে এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরল বাড়ে, ধমনীতে ব্লক তৈরি হয় এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
এ ছাড়া লাল মাংসে থাকা এল-কার্নিটাইন অন্ত্রে ভেঙে টিএমএও নামের ক্ষতিকর যৌগ তৈরি করে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ানোর সঙ্গে যুক্ত।
মাছ, বিশেষ করে স্যালমন ও টুনার মতো ফ্যাটি ফিশ, ওমেগা–৩ ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ—যা হৃদপিণ্ডের সুরক্ষা, রক্তচাপ কমানো ও প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
চামড়াবিহীন মুরগির মাংস তুলনামূলক কম চর্বিযুক্ত এবং হৃদস্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ প্রোটিন উৎস।
ডিমে থাকা প্রোটিন ও ভিটামিন শরীরের জন্য উপকারী। আগের ধারণার বিপরীতে সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, অধিকাংশ মানুষের ক্ষেত্রে দৈনিক এক–দুটি ডিম খাওয়া হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায় না।
অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণে শরীরে নাইট্রোজেন বর্জ্য তৈরি হয়, যা ফিল্টার করতে কিডনিকে বেশি কাজ করতে হয়। দীর্ঘমেয়াদে কিডনির ওপর বাড়তি চাপ রক্তচাপ বাড়াতে পারে, যা হৃদরোগের পরোক্ষ ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
এ ছাড়া বেশি প্রোটিন খেতে গিয়ে অনেকেই ফল, সবজি, শস্যজাতীয় ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার কম খেয়ে ফেলেন—যা হৃদপিণ্ডের সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
সমস্যা প্রোটিনে নয়; বরং উৎস, চর্বির পরিমাণ ও খাদ্যের ভারসাম্যহীনতাই ঝুঁকি বাড়ায়। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ—লাল মাংস বা প্রক্রিয়াজাত মাংস কমিয়ে মাছ, পোল্ট্রি, ডিম ও ডাল–সয়াবিনের মতো উদ্ভিজ্জ প্রোটিনকে অগ্রাধিকার দিলে হৃদস্বাস্থ্যের জন্য তা বেশি নিরাপদ।
সিএনআই/২৫