
খুলনায় সাবেক ছাত্রদল ও যুবদল নেতা, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সরদার মোহাম্মদ মাসুদ হাসানের বাসভবনে বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (অক্টোবর, ২০২৫) রাত আনুমানিক ৯টা ৩০ মিনিটের দিকে নগরীর বাগমারা মেইন রোড এলাকায় এ হামলা চালানো হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মোট চারটি হাতবোমা তার বাসায় নিক্ষেপ করা হয়। এর মধ্যে দুটি বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়, অপর দুটি অবিস্ফোরিত অবস্থায় বাড়ির গেটের সামনে পড়ে থাকে। বিস্ফোরণের পর এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী চা বিক্রেতা জানান, দুটি মোটরসাইকেলে চারজন হেলমেট পরিহিত ব্যক্তি এসে বোমা নিক্ষেপ করে দ্রুত পালিয়ে যায়। হামলাকারীদের মুখ ঢাকা থাকায় কাউকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
সরদার মোহাম্মদ মাসুদ হাসান ও তার বাড়ির কেয়ারটেকার দাবি করেছেন, এটি আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের পতিত নেতাকর্মীদের পরিকল্পিত হামলা। তারা জানান, এর পেছনে গত সেপ্টেম্বর মাসের একটি ঘটনাই মূল কারণ। ওই সময় বাড়ির সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজ শুরু হলে ৪-৫ জন মুখোশধারী যুবক এসে কাজ বন্ধ করতে বলে। নিজেদের স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মী পরিচয় দিয়ে তারা ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
কেয়ারটেকার অভিযোগ করেন, তারা তাকে মারধর করে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যার হুমকি দেয়। হুমকিদাতারা বলেন, সরদার মাসুদ হাসান যদি বাংলাদেশে ফিরে আসেন, তবে তাকে ও তার পরিবারকে গুম করে হত্যা করা হবে। তারা আরও হুমকি দেয়, যদি কাজ বন্ধ না করা হয় এবং টাকা না দেওয়া হয়, তবে বড় ধরনের আক্রমণ চালানো হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালেও সরদার মাসুদ হাসানের ওপর একবার প্রাণনাশের চেষ্টা চালানো হয়েছিল। কেয়ারটেকারের দাবি, এবারও একই গোষ্ঠী এই হামলার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।
বোমা হামলার পরপরই তারা থানায় অভিযোগ জানাতে গেলেও পুলিশ কোনো মামলা নেয়নি বলে জানান সরদার হাসানের পরিবারের সদস্যরা। তারা বলেন, “পুলিশ মৌখিকভাবে বিষয়টি জেনে রাখে, কিন্তু কোনো লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করেনি।”
এ ঘটনায় সরদার মোহাম্মদ মাসুদ হাসান ও তার কেয়ারটেকার উভয়েই জীবনের নিরাপত্তাহীনতা প্রকাশ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরদার মাসুদ গণমাধ্যমকে জানান, “আমি ও আমার পরিবারের ওপর আবারও হামলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশে ফেরার পরিকল্পনা থাকলেও এখন নিরাপত্তার অভাবে তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।”
বর্তমানে তার নির্দেশে বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ কাজ সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশাসনের প্রতি দ্রুত তদন্ত ও নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানিয়েছেন।
হামলার পর এলাকাজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে, তবে পুলিশি টহল বা নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সিএনআই/২৫