বিশ্বজুড়ে বিলাসপণ্যের বাজারে বড় পরিবর্তন এসেছে। এক সময় ধনীরা ব্যক্তিগত জেট, রোলেক্স ঘড়ি, দামি শিল্পকর্ম কিংবা বিলাসবহুল বাড়ি কেনাকে মর্যাদার প্রতীক মনে করতেন। এখন সেই প্রবণতা বদলে গিয়ে ধনীরা পণ্য নয়, বরং ‘অভিজ্ঞতায়’ বিনিয়োগ করছেন।
‘দ্য ইকোনমিস্ট’-এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত কয়েক বছরে বিলাসপণ্যের দাম কমলেও বিলাসবহুল অভিজ্ঞতার খরচ বেড়েছে প্রায় ৯০ শতাংশ। যেমন—বিশ্বের সেরা রেস্তোরাঁয় খাওয়া, সুপার বোল বা উইম্বলডনের টিকিট পাওয়া, কিংবা এক্সক্লুসিভ ফান্ডরেইজারে অংশ নেওয়া এখন ধনীদের নতুন বিলাসিতা।
রোলেক্স ঘড়ি বা পুরোনো ওয়াইনের দাম যেখানে ২০–৩০ শতাংশ কমে গেছে, সেখানে প্যারিসের পাঁচতারা হোটেল ‘লে ব্রিস্টল’-এর এক রাতের খরচ ২০১৯ সালের তুলনায় দ্বিগুণ। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রে গৃহকর্মীদের বেতনও বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ, কারণ অভিজাত পরিবারের জন্য দক্ষ কর্মী পাওয়া এখন কঠিন।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই পরিবর্তন আসছে কারণ বিলাসপণ্য আর ‘দুর্লভ’ নয়। অনলাইন মার্কেটপ্লেস ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কারণে সবাই এখন বিলাসিতার স্বাদ নিতে পারে। ফলে ধনীরা আলাদা হওয়ার উপায় খুঁজছেন অভিজ্ঞতার একান্ততা—যা কেবল দেখা বা কেনা নয়, বরং ব্যক্তিগতভাবে উপভোগের বিষয়।
এই কারণেই নিউইয়র্ক ও প্যারিস ফ্যাশন উইক, মেট গালা, কিংবা এনবিএ প্লে-অফে উপস্থিত থাকা এখন ‘বিলাসিতা’র নতুন সংজ্ঞা। এসব অনুষ্ঠানের টিকিটের দাম গত কয়েক বছরে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিলাসিতার প্রকৃত রূপ এখন পরিবর্তিত হচ্ছে—পণ্যের মালিকানা নয়, বরং অনন্য অভিজ্ঞতা অর্জনই হয়ে উঠছে ধনীদের নতুন মর্যাদা।
আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিতব্য ফুটবল বিশ্বকাপের ফাইনালের টিকিটও হতে পারে সেই নতুন যুগের প্রতীক। কারণ, এক মুহূর্তের লাইভ অভিজ্ঞতা এখন এক বোতল দামি ওয়াইনের চেয়েও অনেক বেশি আকর্ষণীয়।
সিএনআই/২৫