চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু), হল ও হোস্টেল সংসদ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণাকে ঘিরে ক্যাম্পাসজুড়ে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। বুধবার (১৫ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর গেট এলাকায় ছাত্রদল ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা মুখোমুখি অবস্থান নেয়।
সারা দিনব্যাপী শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হলেও রাতের দিকে ফলাফল ঘোষণা ঘিরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দুই ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা গেটের দুই পাশে ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে অবস্থান নেয়। প্রত্যেক দল নিজেদের অবস্থান শক্ত রাখার জন্য মোবাইল ফোনে সমন্বয় করছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, একনম্বর গেট এলাকায় ছাত্রদল ও শিবিরের সদস্যরা স্লোগান দিতে দিতে অবস্থান করছে। এ সময় তারা দাবি করেন, যেন ফলাফল ঘোষণায় কোনো প্রকার অনিয়ম না হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। পুলিশ গেট এলাকায় টহল জোরদার করেছে এবং দুই সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে যেন কোনো সংঘর্ষ না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমও ঘটনাস্থলে অবস্থান নেয়। প্রক্টর জানান, “পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণে আছে। আমরা চাই না কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটুক। দুই পক্ষের সঙ্গেই কথা বলা হচ্ছে।”
শিবিরের কর্মী এহসানুল হক বলেন, “আমরা সারা দিন শান্তিপূর্ণভাবে ভোটে অংশ নিয়েছি। কিন্তু এখন শুনছি কিছু পক্ষ ফলাফল প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। তাই আমরা মাঠে আছি, যেন কোনো অনিয়ম না হয়। আমাদের দাবি কেবল স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ ফলাফল।”
অন্যদিকে ছাত্রদল নেতারা অভিযোগ করেন, নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফল তাদের অনুকূলে আসতে শুরু করলে প্রতিপক্ষ উত্তেজনা সৃষ্টি করছে। তারা বলেন, “আমরা ফলাফল ঘোষণার অপেক্ষায় আছি। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, যেন ভোটের ফলাফল নিরপেক্ষভাবে প্রকাশ করা হয়।”
রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গেট এলাকায় উপস্থিত মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সমন্বিতভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উভয় পক্ষের অবস্থানের কারণে গেট এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার রাখা হয়েছে।
চাকসু নির্বাচনের ফলাফল রাতের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
সিএনআই/২৫