রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় অস্ত্র আইনে করা মামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে মো. ফাতেহ আলী (৬১) ও তার তিন সহযোগীর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেছেন আদালত। এর ফলে মামলাটির বিচার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর বিশেষ ট্রাইব্যুনাল ১৫ নম্বর বিচারক ফাহ্ মিদা জাহাঙ্গীরের আদালত আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নামঞ্জুর করে চার্জগঠনের আদেশ দেন। একই সঙ্গে আগামী ১৬ নভেম্বর সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য করেন আদালত।
বিচার শুরু হওয়া অপর আসামিরা হলেন, আবু রাসেল মাসুদ ওরফে মোল্লা মাসুদ, এম এ এস শরীফ ও আরাফাত ইবনে নাসির। শুনানিকালে সুব্রত বাইন ও আরাফাত ইবনে নাসিরকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। অপর দুই আসামি আবু রাসেল মাসুদ ওরফে মোল্লা মাসুদ ও এম এ এস শরীফকে ভার্চুয়ালি যুক্ত করা হয়।
শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের পক্ষের আইনজীবীরা এই মামলায় অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে থেকে চার্জ গঠনের পক্ষে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত অব্যাহতির আবেদন না মঞ্জুর করে চার্জগঠনের আদেশ দেন।
অস্ত্র মামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের বিরুদ্ধে বিচার শুরু
আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানোর মামলায় ১১তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ
চার্জ গঠনের সময় শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন।
গত ১৩ জুলাই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। এরপরে বিচারের জন্য ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল ১৫ নম্বর আদালতে মামলাটি বদলির নির্দেশ দেন। চার্জশিটভুক্ত অপর তিন আসামি হলেন, আবু রাসেল মাসুদ ওরফে মোল্লা মাসুদ, এম এ এস শরীফ ও আরাফাত ইবনে নাসির।
জানা গেছে, গত ২৭ মে আনুমানিক ভোর ৫টায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ অভিযানে কুষ্টিয়া জেলা থেকে শীর্ষ তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে ফতেহ আলী ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী মোল্লা মাসুদ ওরফে আবু রাসেল মাসুদকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তী সময়ে তাদের তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় সুব্রত বাইনের দুই সহযোগী শুটার আরাফাত ও শরীফকে। অভিযানের সময় তাদের কাছ থেকে পাঁচটি বিদেশি পিস্তল, ১০টি ম্যাগাজিন, ৫৩টি গুলি এবং একটি স্যাটেলাইট ফোন উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় ২৮ মে অস্ত্র আইনে একটি মামলা করেন হাতিরঝিল থানার এসআই আসাদুজ্জামান।
সুব্রত বাইনের বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজিসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। ১৯৯১ সালে নগরীর আগারগাঁও এলাকায় জাসদ ছাত্রলীগ নেতা মুরাদ হত্যার মধ্য দিয়ে তার সন্ত্রাসী জীবনের উত্থান।
২০০১ সালে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করে। এদের মধ্যে ঢাকার অপরাধ জগতের তখনকার প্রভাবশালী সেভেন স্টার গ্রুপের প্রধান সুব্রত বাইনও ছিলেন।
২০০৩ সালের দিকে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর তৎপরতা বেড়ে গেলে সুব্রত ভারতে পালিয়ে যান।