রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরে একটি পোশাক কারখানা ও রাসায়নিকের গোডাউনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে এখন পর্যন্ত ৯ জন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে ফায়ার সার্ভিস। আগুন লাগার চার ঘণ্টা পার হলেও কেমিক্যাল গোডাউনে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বিকেলে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “মিরপুরের রূপনগরের এই গোডাউনে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট কাজ করছে। ভবনের ভেতরে ঠিক কোন ধরনের রাসায়নিক রয়েছে, তা এখনো নির্ধারণ করা যায়নি। পরিস্থিতি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় উদ্ধার অভিযান শুরু করা যায়নি।”
তিনি আরও জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে আধুনিক প্রযুক্তি ও বিশেষ কেমিক্যাল ব্যবহারের মাধ্যমে নিউট্রালাইজ করার চেষ্টা চলছে।
ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানান, সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে আগুন লাগার খবর পাওয়া যায়। প্রথম ইউনিট ১১টা ৫৬ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় এবং একে একে মোট ১২টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, হঠাৎ পোশাক কারখানার ভেতরে বিস্ফোরণ ঘটে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই পাশের রাসায়নিকের গোডাউনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে ধোঁয়ায় গোটা এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
আগুন লাগার পর ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয় জনসমাগম নিয়ন্ত্রণে। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয় স্থানীয় পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, স্বেচ্ছাসেবক এবং আশপাশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা পানি সরবরাহ, ব্যারিকেড স্থাপন ও আহতদের উদ্ধারকাজে সহায়তা করে।
একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, বিস্ফোরণের পর ভবনের জানালা ও কাচ ভেঙে পড়ে। আশপাশের অন্তত তিনটি ভবন আগুনের তাপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, পোশাক কারখানার দ্বিতীয় তলা থেকে নয়জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে নিহতদের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। দগ্ধ কয়েকজনকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।
আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের যৌথভাবে ঘটনাস্থলে তদন্ত শুরু করবে। ধারণা করা হচ্ছে, কারখানার নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি ও রাসায়নিকের অনিয়ন্ত্রিত সংরক্ষণের কারণেই এত বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে।