২০২২ সালে প্রথমবারের মতো নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পায় বাংলাদেশ। সেবার পাকিস্তানকে হারিয়ে ইতিহাস রচনা করেছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। এবার নিজেদের দ্বিতীয় আসরের প্রথম ম্যাচেই জয় পেল বাংলাদেশ। এবারও প্রতিপক্ষ সেই পাকিস্তান। ওয়ানডে বিশ্বকাপ ইতিহাসে বাংলাদেশের নারীরা দ্বিতীয় জয় পেল ১১৩ বল হাতে রেখে, পাকিস্তানকে ৭ উইকেটে উড়িয়ে।
কলম্বোতে প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশের সামনে ১৩০ রানের লক্ষ্য দেয় পাকিস্তান। মামুলি এই লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৭ রানেই ফারজানা হককে হারায় বাংলাদেশ। ৩৫ রানের মাথায় বিদায় নেন শারমিন আক্তার সুপ্তাও। তবে তৃতীয় উইকেটে ওপেনার রাবিয়া হায়দার ঝিলিক ও অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির দুর্দান্ত জুটিতে সহজ জয়ের পথে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।
ঝিলিক ও জ্যোতি ৭৭ বলে ৬২ রানের নান্দনিক এক জুটি গড়েন। ৪৪ বলে ২৩ রান করে দলীয় ৯৭ রানে আউট হন জ্যোতি। তবে এরপরও ঝলক দেখাতে থাকেন ঝিলিক। শেষ পর্যন্ত মাঠে থেকে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন তিনি। খেলেছেন ৭৭ বলে ৫৫ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। হাঁকিয়েছেন ৭টি চার। আরেক পাশে ১৯ বলে ২৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন সোবহানা মোস্তারি। তাতে পরপর দুই বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারানোর কৃতিত্ব দেখাল বাংলাদেশের নারীরা।
এর আগে, মারুফা আক্তার-স্বর্ণা আক্তারদের বোলিং আগুনে পুড়ে ৩৮.৩ ওভারে ১২৯ রানেই গুটিয়ে যায় পাকিস্তানের মেয়েরা। মারুফা তার ও ইনিংসের প্রথম ওভারেই ফিরিয়েছেন ওমাইমা সোহাইলকে। পরের বলেই বোল্ড করেছেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা সিদ্রা আমিনকে। পাকিস্তানের ধ্বংসের শুরু সেখানেই। তবে তৃতীয় উইকেটে ওপেনার মুনিবা আলি ও চারে নামা রামিন শামীম ৪২ রানের জুটি গড়ে প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেন।
পাকিস্তান যখন জুটি গড়ে সামনে আগানোর স্বপ্ন দেখছে তখন আঘাত হানেন স্পিনার নাহিদা আকতার। ৩ রানের ব্যবধানে ফিরিয়ে দেন মুনিবা (৩৫ বলে ১৭) ও রামিনকে (৩৯ বলে ২৩)। ৪৭ রানে ৪ উইকেট হারানো দলে পরিণত হয় পাকিস্তান। এরপর ২০ রানের ছোট জুটি গড়েন সিদরা নওয়াজ ও আলিয়া রিয়াজ। সিদরাকে (২০ বলে ১৫) ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন রাবেয়া খান।
পাকিস্তান তাদের ইনিংসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৪ রানের জুটি গড়ে ষষ্ঠ উইকেটে। এবার আলিয়াকে (৪৩ বলে ১৩) ফেরান নিশিতা আকতার নিশি। ৯১ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারানো পাকিস্তান ৯ উইকেট হারায় ১১৫ রানের মধ্যেই। তবে নয়ে নামা ডায়ানা বেগের ২২ বলে অপরাজিত ১৬ রানে ১২৯ পর্যন্ত করে পাকিস্তান। ইনিংসে তখনো বাকি ছিল ৬৯ বল।
বাংলাদেশের হয়ে আজ ছয় বোলার বল করে সবাই উইকেট পেয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে সফল স্বর্ণা আকতার। ৩ ওভার ৩ বল করে মাত্র ৫ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট শিকার করেন তিনি। ২টি করে উইকেট নেন মারুফা ও নাহিদা। বাকি ৩টি উইকেট নেন নিশি, ফাহিমা ও রাবেয়া।