মেহেদী হাসান, রাঙামাটিঃ "লাশের উপর নৃত্য" এবং "পায়ের রগ কেটে হত্যা"—এমন বর্বর ও অমানবিক ঘটনার বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে রাজপথে নেমেছেন রাঙামাটির বিভিন্ন সংগঠনের ছাত্রনেতারা ও সচেতন নাগরিকবৃন্দ।
শনিবার (১২ জুলাই) বিকাল ৪ টায় আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলটি রাঙামাটির বনরূপা বাজার থেকে শুরু হয়ে কোর্ট বিল্ডিং হয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন- “খুন, চাঁদাবাজি আর নয়!” “সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই!” “বর্বরতার বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ ঐক্যবদ্ধ!”
বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী প্রতিবাদ সমাবেশে ছাত্রনেতা নুরুল আলমের সঞ্চালনায় রাঙামাটির বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
এসময় ছাত্রনেতা মোঃ ইমাম হোছাইন ইমু বলেন, “আমরা আজ রাজপথে নেমেছি ন্যায়বিচারের দাবিতে। যারা নিরীহ মানুষকে খুন করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। পায়ের রগ কেটে হত্যা—এটা কোনো সভ্য সমাজে কল্পনাও করা যায় না। বিচারহীনতার সংস্কৃতিই আজকের এই নৃশংসতার মূল কারণ। আমরা এই চক্রের বিচারের দাবিতে নো টলারেন্স ঘোষণা করছি।”
রাঙামাটি কৃষি ইনস্টিটিউট ছাত্রনেতা মোঃ জালাল উদ্দীন বলেন, “আমরা বারবার দেখেছি খুনিদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন করতে হয়। এটা রাষ্ট্রের ব্যর্থতা। যদি রাষ্ট্র সঠিক সময়ে ব্যবস্থা নিতো, তাহলে আজ এই পরিস্থিতি তৈরি হতো না। খুন, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ—এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ চুপ করে থাকবে না।”
রেড জুলাই রাঙামাটি শাখার সহ-মুখপাত্র সাদিয়া ইসলাম সায়েদা বলেন, “নারীর অধিকার, মানুষের অধিকার—সবই আজ প্রশ্নবিদ্ধ। যে রাষ্ট্রে খুনের বিচার হয় না, সেই রাষ্ট্রে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা থাকে না। আমাদের পক্ষ থেকে আমরা এই নৃশংসতার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আন্দোলনের ঘোষণা দিচ্ছি। আমরা ন্যায়বিচার না পাওয়া পর্যন্ত থামব না।”
এনসিপি রাঙামাটি জেলা শাখার যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন বলেন, “দেশের মাটিতে এমন বর্বরতা আমাদের গর্বের জায়গাকে কলঙ্কিত করছে। আমরা নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে বলছি—এই হত্যাকাণ্ডগুলোর সুষ্ঠু বিচার না হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে যাব।”
গণঅধিকার পরিষদের রাঙামাটি জেলা শাখার সদস্য সচিব ওয়াহিদুজ্জামান রোমান বলেন, “আমরা এই অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় প্রতিবাদ ছড়িয়ে দিতে চাই। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। ইন্টেরিয়ম সরকারের কাছে দাবি বিশেষ ক্ষমতায়নের মাধ্যমে যৌথবাহীকে চাঁদাবাজ দখলবাজদের জিরু টলারেন্স এ নিয়ে আসা। এই সকল হত্যাকাণ্ডের প্রতিটি অভিযুক্তকে দ্রুত আইনের আওতায় আনুন।”
বক্তাদের বক্তব্য শেষে আয়োজকরা প্রতিবাদ সমাবেশের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে গত ৯ জুলাই এক ব্যবসায়ীকে হত্যা করা হয়। হত্যার কিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে দেশজুড়ে শুরু হয় তুমুল আলোচনা-সমালোচনা।