খাদ্যাভ্যাস ও দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা: সাউথ অস্ট্রেলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা
সাউথ অস্ট্রেলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা খাদ্যের গুণগত মান ও দীর্ঘস্থায়ী ব্যথার মাত্রার মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন, বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে। গবেষণায় দেখা গেছে, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস শরীরের ওজনের ওপর নির্ভর না করেও ব্যথা কমাতে সহায়ক হতে পারে। অর্থাৎ, ওজন বেশি বা স্বাস্থ্যকর ওজন যা-ই হোক না কেন, পুষ্টিকর খাবার দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা লাঘবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
কেন স্বাস্থ্যকর খাবার গুরুত্বপূর্ণ?
গবেষকরা ব্যাখ্যা করেছেন, কিছু নির্দিষ্ট খাবার প্রদাহ কমাতে এবং ব্যথা ব্যবস্থাপনায় কার্যকর ভূমিকা পালন করে। এর পেছনের কারণগুলো হলো—
প্রদাহ-বিরোধী প্রভাব:
ফল, শাকসবজি, গোটা শস্য, চর্বিহীন প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর চর্বি প্রদাহ কমাতে সহায়ক।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সুবিধা:
এই খাবারগুলো অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করে, যা ব্যথার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
স্নায়ু ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি:
পুষ্টিকর খাদ্য স্নায়ু, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও অন্তঃস্রাবী সিস্টেমের কার্যকারিতা উন্নত করে, যা ব্যথার অনুভূতির ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে।
দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা কমাতে সহায়ক খাবার
শাক-সবজি ও ফলমূল:
বিভিন্ন রঙের শাকসবজি ও ফল ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ, যা প্রদাহ কমায়।
আস্ত শস্য (Whole Grains):
বাদামি চাল, ওটস, কুইনোয়া ও অন্যান্য আস্ত শস্য শক্তি সরবরাহ করে ও প্রদাহ হ্রাসে সহায়তা করে।
চর্বিহীন প্রোটিন:
মাছ, মুরগি, টোফু ও ডালজাতীয় খাবার পেশীর গঠন ও মেরামতে সাহায্য করে, যা ব্যথা ব্যবস্থাপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
স্বাস্থ্যকর চর্বি:
অ্যাভোকাডো, অলিভ অয়েল ও ফ্যাটি মাছ (স্যামন) ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সরবরাহ করে, যা প্রদাহ কমাতে কার্যকর।
দুগ্ধজাত খাবার:
দুধ, দই ও উদ্ভিদ-ভিত্তিক দুগ্ধজাত বিকল্প ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি সরবরাহ করে, যা হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
সুস্থ থাকতে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনুন
ব্যথা কমাতে ও দীর্ঘমেয়াদি সুস্থতার জন্য প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলা ও পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করা জরুরি। ব্যালান্সড ডায়েট মেনে চললে এটি শুধু ব্যথা কমায় না, বরং সামগ্রিক স্বাস্থ্যও উন্নত করে।