ইরান গত বছর বিভিন্ন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত প্রায় এক হাজার মানুষের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে। আন্তর্জাতিক দুটি মানবাধিকার সংস্থা ইরানে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের এই সংখ্যা ভয়াবহভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছে। বৃহস্পতিবার ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এ তথ্য জানায়।
নরওয়ে-ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) এবং ফরাসি সংস্থা টুগেদার এগেইনস্ট দ্য ডেথ পেনাল্টি (ইসিপিএম) জানিয়েছে, ২০০৮ সালে ইরানে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের রেকর্ড রাখা শুরুর পর ২০২৪ সালে সর্বোচ্চ ৯৭৫ জনের সাজা কার্যকর হয়েছে।
সংস্থা দুটির প্রকাশিত যৌথ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরানে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আন্তর্জাতিক এই দুই মানবাধিকার সংস্থা অভিযোগ করেছে যে, ইরান রাজনৈতিক নিপীড়নের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে মৃত্যুদণ্ডকে ব্যবহার করছে।
আইএইচআরের পরিচালক মাহমুদ আমিরি-মোঘাদ্দাম বলেন, ‘‘ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য নিজ নাগরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অংশ হিসেবে ইরান সরকার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করছে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধের হুমকি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে গত বছরের শেষ তিন মাসে দেশটিতে প্রতিদিন গড়ে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।’’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে রেকর্ড করা ৮৩৪ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের তুলনায় ২০২৪ সালে প্রায় ১৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা ৯৭৫ জনের মধ্যে অন্তত চারজনকে জনসম্মুখে ফাঁসি দেওয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে কমপক্ষে ৩১ জন নারী, যা গত ১৭ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
ইরানে হত্যা, মাদক পাচার, ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনসহ বড় ধরনের অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, চীনের পর বিশ্বে ইরানেই প্রতি বছর সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। তবে দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্ভরযোগ্য সরকারি পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না।