ভারতের বিরোধী রাজনৈতিক দল কংগ্রেসের নেতা শশী থারুর বলেছেন, বাংলাদেশ কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল বা সম্প্রদায়ের জন্য নয়, বরং সকল নাগরিকের কল্যাণের প্রতি ভারতের প্রতিশ্রুতি স্পষ্ট করা উচিত। নয়াদিল্লিতে ফরেন করেসপন্ডেন্টস ক্লাবে (এফসিসি) এক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
শশী থারুর বলেন, "বাংলাদেশে চলমান পরিস্থিতি নয়াদিল্লিকে সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করা উচিত। প্রতিবেশী দেশটি ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, এবং সেখানে প্রতিকূল সরকার ক্ষমতায় এলে ভারতের জন্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।"
ভারতের সংসদের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির প্রধান হিসেবে তিনি আরও বলেন, "বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী হিসেবে আমাদের প্রতিশ্রুতি বাংলাদেশের জনগণের প্রতি। কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল বা সম্প্রদায়ের প্রতি অতিরিক্ত আগ্রহ দেখানোর পরিবর্তে, আমাদের উচিত বাংলাদেশের জনগণের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করা।"
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র ও সাধারণ জনতার ব্যাপক আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরবর্তীতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। শেখ হাসিনার ভারত অবস্থান প্রসঙ্গে শশী থারুর বলেন, "ভারত মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তাকে আশ্রয় দিয়েছে, যা সমর্থনযোগ্য।"
অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাংবাদিকরা বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে প্রশ্ন করেন।
বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে থারুর বলেন, "বাংলাদেশের বর্তমান সরকারকে আমরা প্রতিকূল হিসেবে দেখছি না, তবে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।"
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক বক্তব্য প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা স্বীকার করেন, "তার কিছু মন্তব্য পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলেছে, যা আমাদের জন্য কূটনৈতিকভাবে চ্যালেঞ্জিং।"
তিনি আরও বলেন, "বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত নয়, যা হস্তক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। পাশাপাশি, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি হওয়া উচিত জনগণের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়া, নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দল বা সম্প্রদায়ের নয়।"
সংক্ষেপে থারুরের মূল বার্তা:
বাংলাদেশ পরিস্থিতি সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা উচিত।
ভারতের প্রতিশ্রুতি হওয়া উচিত সকল বাংলাদেশির কল্যাণের প্রতি, নির্দিষ্ট দল বা সম্প্রদায়ের প্রতি নয়।
শেখ হাসিনাকে মানবিক কারণে আশ্রয় দেওয়া সমর্থনযোগ্য।
বাংলাদেশের বর্তমান সরকার প্রতিকূল নয়, তবে কিছু সতর্কতা প্রয়োজন।
ভারতের উচিত বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে প্রকাশ্যে বা গোপনে হস্তক্ষেপ না করা।